শুক্রবার , ১৩ জুন ২০২৫ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-বিচার
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইসলাম
  8. ঈদুল ফিতর
  9. ক্যাম্পাস
  10. ক্রিকেট
  11. খুলনা
  12. খেলা-ধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. জাতীয়
  15. ঢাকা

আটপাড়ায় টাকা নিয়ে বিবাদ এসআই জাহিদুল হাসানকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র প্রতিপক্ষের

প্রতিবেদক
স্বাধীন কাগজ
জুন ১৩, ২০২৫ ৩:১৬ অপরাহ্ণ   প্রিন্ট সংস্করণ

তানজিলা শাহ্ রূবী  (নেত্রকোণা জেলা সংবাদদাতা):  নেত্রকোণার আটপাড়ায় ছুটিতে এসে এক ছাত্রদল নেতাকে মারধরের মিথ্যা অভিযোগ উঠেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ উত্তরা থানায় কর্মরত এস আই জাহিদুল হাসানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রকাশ।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আটপাড়া উপজেলা শুনই ইউনিয়নের মল্লিকপুর শুনই গ্রামের মৃত. হাফিজ উদ্দিন এর ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী মুস্তাকিম এর কাছে বিদেশ নেওয়ার জন্য আজিজুল নামে দরিদ্র এক লোক প্রায় তিন বছর আগে দুই লক্ষ টাকা দেয় কিন্তু মালয়েশিয়া না নিতে পারায় টাকা ফেরত চাই কিন্তু তিন বছর হয়ে গেলেও টাকা দিতে অস্বীকার করে মুস্তাকিম এ নিয়ে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে এবং মুস্তাকিম দেশের বাইরে থাকায় যোগাযোগও করতে পারছে না আজিজুল।

এদিকে মুস্তাকিম গত সাত তারিখ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ছয় মাসের ছুটিতে আসে এ খবর পেয়ে আজিজুল ও তার আত্মীয় হাসিবুল হাসান রতন যার মাধ্যমে মুস্তাকিম সহযোগী হিসেবে কাজ করাতো উভয়ই তার কাছে টাকা ফেরত দিতে বলায় উল্টো টাকা নেয়নি বলে জানিয়ে দেয়। এর পরে ১০ জুন দুপুর ১২ টায় শাকিলের ছোট ভাই মনির এলাকার নতুন বাজারে গেলে সেখানে উপ-পরিদর্শক জাহিদুলের ছোট ভাই আয়েতুল ইসলাম হৃদয় তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

এ ঘটনা শুনতে পেয়ে শাকিল বাজারে গিয়ে তার ভাইকে মারধরের কারণ জানতে চান। চিল্লাচিল্লি শুনে একপর্যায়ে শাকিলের চাচা মোস্তাকিম(৪৫) দেশীয় অস্ত্রসহ অলিউল্লাহ আরও কয়েক জন রতনের উপর হামলা চালায় ।

এ সময় মোস্তাকিমের পিছন থেকে দেশীয় রামদা দিয়ে রতনের উপরে কুপ ছুরে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। পরে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে গ্রামের আশেপাশে লোকজন এসে জমাট হয় । তখন শাকিলের মাথায় আঘাত লাগে কিন্তু কিভাবে লাগে সেটা স্থানীয় কেউই বলতে পারছে না। পরে চিকিৎসার জন্য আটপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্মরত ডাক্তার নেত্রকোণায় রেফার্ড করে। কিন্তু এদিকে ঘটনার দিন রাতে ফেসবুকের মাধ্যমে কয়েকটি পত্রিকায় নিউজ দেখতে পায় যে উত্তরা কর্মরত এস আই জাহিদুল হাসান রিয়াদ ছাত্রদল নেতা শাকিলকে কাঠ দিয়ে আঘাত করায় শাকিলের মাথা ফেটে যায় এবং তার পিতা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলে প্রচার করে।

কিন্তু সরেজমিনে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় জাহিদুল হাসান রিয়াদ ঝগড়া থেকে একটু দূরেই ছিল এবং তার পিতা কোন আওয়ামী লীগের নেতা নয় বরং ঐ বাজার ও মসজিদের সভাপতি কিন্তু রাজনৈতিকের সাথে জড়িত নয়। তাছাড়া যে গণমাধ্যমগুলোতে এই নিউজ ছড়িয়ে ছিল তারা কেউ সরেজমিনে এসে যাচাই না করেই নিউজ করেছে যার কারণে অনেক তথ্যই ভুল হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, মূলত আজিজুলের টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অনেকদিন ধরে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল এখন মুস্তাকিম দেশে আসায় সে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয় হয়তো তর্কাতর্কি ও হয়েছিল।

সে বিষয়টাকে কেন্দ্র করে রিয়াদের ছোট ভাই শাকিবের ছোট ভাই মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় বাকবিতন্ডা হয়, বড়রা এসে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়ির দিকে পাঠিয়ে দেয় এর মধ্যেই মুস্তাকিম রামদার মত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রতনের উপর দুটি কুপ দেয় যদিও ভাগ্যক্রমে রতনের গায়ে পড়েনি তখন আশেপাশের মানুষ এসে উভয়কেই ফিরিয়ে নেয় এর মধ্যে শাকিলকার আঘাতে আহত হয়েছে সেটা বুঝতে পারেনি তারপর শাকিলকে হাসপাতালে পাঠিয়ে বর্তমানের সদরে আছে। তবে নিউজের ক্ষেত্রে কিছু তথ্য ভুল দিয়েছে যার জন্য এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদও নিন্দা জানায় কারণ এস আই জাহিদুল হাসান রিয়াদ খুবই ভালো ছেলে সেও ঝগড়ার ভিতর ছিল না কেউই বলতে পারবে না যে সে কারো সাথে কখনো ঝগড়া করেছে।আসলে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসাচ্ছে প্রতিপক্ষরা বলে দাবি এলাকাবাসীর।

এদিকে অভিযুক্তরা বলেন, মোস্তাকিম ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী সে ঐ দেশে অন্য জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে লোক নিতো আর বাংলাদেশ থেকে লোক সংগ্রহ করতো রতন নিজেই । সে ৪-৫ লক্ষ টাকা নিয়ে লোক পাঠাতো এদিকে আজিজুলের টাকা মুস্তাকিম পাইনি যার জন্য মালয়েশিয়ায় যেতে পারেনি। উল্টো রতন অতিরিক্ত টাকা নিয়ে লোক পাঠাতো এমনটায় জানালো পরিবার। এই টাকাকে কেন্দ্র করে নতুন বাজারে ঝগড়ার সৃষ্টি হয় এবং মোস্তাকিমের ভাতিজা শাকিল ও মুস্তাকিম দুজনে আহত হয় চিকিৎসাধীন আছে। তারা আরো বলে শাকিলকে ঐ এসআই জাহিদুল কাঠ দিয়ে আঘাত করেছে।

এদিকে মুস্তাকিমের পরিবারের নাম্বারে ফোন দিও যোগাযোগ করা যায়নি। ভুক্তভোগী আজিজুল বলেন, তিন বছর আগে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জমি বিক্রি করে দুই লাখ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয় ।

কিন্তু দীর্ঘদিন চলে যাওয়া বিদেশ না নিতে পাড়ায় টাকা ফেরত চাইলে মুস্তাকিম বিভিন্ন তালবাহানা করে। এ নিয়ে সালিশ হওয়ার কথা থাকলেও সে জটিল রোগে আক্রান্ত তার চিকিৎসার জন্য এলাকার সালিশে বসা হয়নি।

এর মধ্যে ছোট ভাইদের ঝামেলায় এতো বড় ঘটনাটি ঘটে। হাসিবুল হাসান রতন জানান,তার দুজন আত্মীয় কে তার মাধ্যমে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য তার সাথে যোগাযোগ করলে সে তার সংগ্রহ করা কয়েকজনকে আমার দায়িত্বে মেডিকেল ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট করার দায়িত্ব দেয় সেই জন্যেই তাকে সহযোগিতা করি।

আজিজুলের মেডিকেল এর সময় ২ লাখ টাকা সাতক্ষীরার শাহিনা খাতুন নামে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে একাউন্ট নং- ২৮১৮৩০১০২৮১৭৮ টাকা পাঠানো হয় যার প্রমাণ তার কাছে আছে বলে জানান ।তিনি আরো বলেন ,৪-৪.৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরও তার আত্মীয় দুজনকে এয়ারপোর্টে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে পেন্ডিং দেখায় তখন মোস্তাকিম কে ফোন দেয় তখন সে বলে দুজনকে দিতে হবে না তার নিজের সংগ্রহ করা লোকদের কাছ থেকে আরো ৫০ হাজার টাকা করে নেবে রতনকে আর দিতে হবে না এমনটা বলে।

তার লোকদের কাছ থেকে চাপ দিয়ে আরো ৫০ হাজার টাকা করে নেয়। বাজারের যে ঘটনাটি সেটি ছোটদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং মনিরকে চর দেওয়ার কারণে তার ছোট ভাইয়ের হৃদয়কেও সে শাসন করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এর একটু পরে বাড়িতে আসার সময় মুস্তাকিম দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপ ছুঁড়ে । আর শাকিল কিভাবে আহত হয়েছে সেটার ব্যাপারে জানি না হয়তো কারো আঘাতে আঘাত পেয়েছে তবে এসআই জাহিদুল তাকে আঘাত করেনি সে ঝগড়ার মধ্যে ছিল না।

এদিকে ঝগড়ার সময়সহ কয়েকটি তথ্য দিয়েছে তার একটু ও সঠিক নয় এবং কোন সংবাদকর্মীও এখানে যাচাই-বাছাই না করেই নিউজ করেছে যার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। এস আই জাহিদুল হাসান রিয়াদ জানান, তার ছোট ভাই হৃদয় মনির এর সাথে ঝগড়া লাগলে তাদের ফিরিয়ে বাড়ি নিয়ে চলে যায় ।তখন হঠাৎ চেঁচামেচি শুনে কাছে যাওয়ার আগেই কয়েক জন তাকে আটকে রাখে । শাকিলের আঘাতের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজার ঝগড়া হচ্ছিল যেতেই তো পারেননি তাহলে আঘাত কিভাবে করবে। অযথাই চাকরি খেয়ে পেলার জন্য মিথ্যা নিউজ করিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।

আটপাড়া ছাত্রদল নেতা মাহামুদুল হাসান আপেল বলেন, এটা কোন রাজনৈতিক ঝামেলা নয় এটা ব্যক্তিগত বিদেশে যাওয়া টাকা নিয়েছে ।

তাই এ ঘটনাটি রাজনৈতিক প্রভাব না ফেলানোই ভালো । তাছাড়া আজিজুল খুবই দরিদ্র একজন লোক তার কোন ছেলে সন্তান নেই সে একটি জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছিল তাই দ্রুত উনার টাকাটা ফেরত দিয়ে দেন সে কামনায় করেন তিনি। আটপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন,অভিযোগ দিতে আসলে সত্যি ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেন কিন্তু পরে আর তারা অভিযোগ দিতে আসেনি তবে সরেজমিনে তদন্তে গেলে ঝগড়ার ঘটনা ঘটলেও এস আই জাহিদুল ঝগড়ার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না বলে জানতে পারেন।

সর্বশেষ - সংবাদ