ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে এর প্রভাব সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংকট ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর বহুমাত্রিক চাপ তৈরি করতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক- সোহেল সামাদ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্য একটি জ্বালানিনির্ভর অঞ্চল।
যুদ্ধ শুরু হলে তেল সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে।
এর প্রভাব বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশের ওপর এসে পড়বে। ফলে পেট্রোল-ডিজেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি উৎপাদন খরচ বাড়াবে, যা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ডেকে আনবে।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতির আরেক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হচ্ছে রেমিট্যান্স। আমাদের বিপুলসংখ্যক শ্রমিক সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত। যুদ্ধ পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে এসব দেশে শ্রমবাজারে অস্থিরতা, কর্মী প্রত্যাবাসন বা বেতন স্থগিতের মত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যার ফলে রেমিট্যান্স হ্রাস পেয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি করবে।
” অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন ছিল আরও তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, “যুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি অন্যদিকে সরে যেতে পারে। এতে হয়তো নির্বাচন নিয়ে বিদেশি চাপ কিছুটা কমবে, কিন্তু অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা ও জনসন্তুষ্টি বজায় রাখতে সরকারকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাজেট ঘাটতি, জ্বালানি ভর্তুকি ও খাদ্য নিরাপত্তা—এই তিনটি জায়গায় চাপ সৃষ্টি হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ যেহেতু একটি ধর্মীয় আবেগপ্রবণ দেশ সেক্ষেত্রে ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়া একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য।
একদিকে পশ্চিমা দেশ, অন্যদিকে ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র—দুই পক্ষকেই সামলানো সহজ হবে না। কূটনৈতিকভাবে একটুও ভুল করলে বাণিজ্য চুক্তি, সহায়তা এবং বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।” সোহেল সামাদ শেষ কথা হিসেবে বলেন, “সরকারকে এখনই অর্থনৈতিক প্রস্তুতি ও কূটনৈতিক কৌশল সাজাতে হবে।
যুদ্ধ আন্তর্জাতিক হলেও এর অভিঘাত বাংলাদেশের ঘরে ঘরে টের পাওয়া যাবে, যদি আমরা আগাম প্রস্তুতি না নেই।”