মঙ্গলবার , ১৭ জুন ২০২৫ | ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-বিচার
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইসলাম
  8. ঈদুল ফিতর
  9. ক্যাম্পাস
  10. ক্রিকেট
  11. খুলনা
  12. খেলা-ধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. জাতীয়
  15. ঢাকা

ঝিনাইগাতীতে ঐতিহ্যবাহী আবহমান বাংলার হুক্কা এখন বিলুপ্ত

প্রতিবেদক
স্বাধীন কাগজ
জুন ১৭, ২০২৫ ৬:৫২ অপরাহ্ণ   প্রিন্ট সংস্করণ

এম,শাহজাহান, (ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতা): একসময়ে ধূমপায়ীদের প্রিয় বস্তূ ছিল হুক্কা, তিন-চার দশক আগেও বাংলার গ্রামগঞ্জে ধূমপায়ীরা হুঁক্কার মাধ্যমে তামাকপানের নেশায় ছিল অভ্যস্ত। সেসময় দেশের প্রায় সব বাড়িতেই ছিল এর প্রচলন, তখনকার দিনে গ্রাম্য সালিশ, সামাজিক অনুষ্ঠান বা পাড়া প্রতিবেশীরা জমায়েত হয়ে ছোটবড় ধুমপায়ী সবাইকে হুঁক্কায় আপ্যায়নের রীতিছিল। হুক্কা নিয়ে সাংস্কৃতিমনা ব্যক্তিরা গান, কবিতা, ও থিয়েটারে ডায়ালগ আবৃত্তি করেছিলেন।

কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী হুক্কা এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এ হুঁক্কার জায়গা দখল করে নিয়েছে, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নিকোটিনযুক্ত সিগারেট ও বিড়ি। বর্তমান প্রজন্মের ধুমপান উপযুক্ত শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকার তরুণ যুবকদের বড় একটা অংশ নিষিদ্ধ মাদকের নেশায় মাতোয়ারা।

অথচ কম নিকোটিনযুক্ত হুঁক্কার প্রচলন যদি এখনো থাকতো, তাহলে যুবসমাজ মাদক গ্রহণের অধঃপতন থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পেতো। গ্রামাঞ্চলের প্রভাবশালী ও বিত্তবানদের বাড়িতে হুক্কার বাচনভঙ্গি ছিল বিলাসিতা স্টাইলের। লম্বা পাইপযুক্ত শোভাবর্ধন স্ট্যান্ড হুঁক্কার কলকিতে তামাক দিয়ে টিক্কার আগুন ধরিয়ে কুরুত, কুরুত, টান দিতো পাড়ার মোড়ল ও গুনিজনরা। বর্তমান প্রজন্মের কাছে হুঁক্কা একটি অপরিচিত বস্তূ। তামাক খাওয়াতো দূরের কথা, এবস্তূ চোখেই দেখেনি তারা।

সম্প্রতি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের নিভৃত এলাকায় ঘুরতে গেলে এক বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে বসে কালা খালেকের সঙ্গে বৈকালিক আড্ডায় হুঁক্কা পানরত অবস্থায় দেখা যায় জডু মিয়াকে। হুক্কাবিষয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘তিন-চার দশক পূর্বেও আমাদের বাপ দাদারা তিন বেলা খাবার খেতে যতটা আগ্রহী হতোনা ততটা আগ্রহী ছিলেন হুক্কা টানায়। এছাড়া তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন কল্পনাও করা যেত না। ঘরে চালডাল না থাকলেও যথেষ্ট পরিমাণে জমা থাকত হুক্কার তামুক।

তামাকপাতা এনে টুকরা টুকরা করে কেটে এতে চিটাগুড় মিশিয়ে তৈরি করা হতো এ তামুক। এতে নিকোটিনের পরিমাণ অনেক কম থাকে। যতটুকু নিকোটিন থাকে তা নারকেলের টোলে থাকা পানিতে মিশে যায়। তিনি আরও বলেন, ‘বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখে আমি হুক্কা টানায় রয়েছি প্রায় ৬০ বছর ধরে। এছাড়া জীবনে সিগারেট-বিড়ি বা পানও খাইনি।

আমার গ্রামের আর কেউ না খেলেও আমি হুক্কার প্রেমে কাটিয়ে দিয়েছি ৬০ বছর। আমার বাড়িতে এসে অনেকেই শখ করে হুক্কায় টান দেয়, তাতেই আমি শান্তি পাই। হুক্কা নিয়ে রচিত গান, ছড়া, এখনও দেশের সংস্কৃতিতে পরিচিত হলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে বস্তূটি। হুক্কা নিয়ে তখনকার ‘কবিরা’ যেসব ছন্দে আবহমান বাংলার জনপ্রিয় গানের শিরোনাম ছিল। “ও-পরানের হুক্কারে তোর নাম কে রাখছে ডাবা–“হুক্কার, পেটভরা জলে, টানছে দুজন মিলে, হায়রে সে-ই হুক্কারে–। এখন শহর তো দূরের কথা, গ্রামের পর গ্রাম ঘুরেও পাওয়া যায় না হুঁক্কার দেখা।

সর্বশেষ - সংবাদ

আপনার জন্য নির্বাচিত