মোহাম্মদ ইউসুফ আলী(মাদারগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা): জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর কড়ইচড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষবাথান পূর্ব পাড়া সমাজী বাড়িতে প্রায় তিন দশক পর সংঘটিত হলো এক ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল এই চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। ডাকাত দলের মূল টার্গেট ছিল মোঃ ফকির আলীর বাড়ি। জানা যায়, তার ঘরে গরু বিক্রির নগদ টাকা ও জমি বন্ধক রেখে নেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য সংরক্ষিত একটি বড় অংকের টাকা রাখা ছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাত দল পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই টাকার খবর পেয়ে এই হামলা চালিয়েছে। প্রথমে ডাকাতরা পাশের ঘরগুলোর দরজা বাইরে থেকে বেঁধে দেয়, যাতে কেউ বাইরে বের হতে না পারে কিংবা ডাক-চিৎকার দিয়ে প্রতিবেশীদের সতর্ক করতে না পারে। এরপর তারা মোঃ ফকির আলীর ঘরের দরজার তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। ঘুমন্ত ফকির আলী বুঝতে পারার সাথে সাথেই প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে তার সঙ্গে ডাকাতদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। প্রতিরোধে ক্ষিপ্ত হয়ে ডাকাত দলের একজন ধারালো ছুরি দিয়ে মোঃ ফকির আলীকে আঘাত করে। তার বুক ও কাঁধে গভীর জখম হয় বলে জানা গেছে। পরিবারের সদস্যরা জানায়, তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে ডাকাতরা দ্রুত পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় মোঃ ফকির আলীকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার ছেলে মোঃ বিপুল জানান, বর্তমানে তার বাবা আশঙ্কামুক্ত এবং জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি বলেন, “আমার বাবা গরু বিক্রি করেছিলেন এবং জমি বন্ধকের টাকা ফেরত দিতে কিছু টাকা ঘরে রেখেছিলেন। ডাকাতরা সেটা জানতো বলেই পরিকল্পিতভাবে আমাদের বাড়ি টার্গেট করেছে।” স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, গত প্রায় ২৮ থেকে ৩০ বছরে এই এলাকায় ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন। এই ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে উদ্বেগ ও আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাবে।