মোঃ রফিকুল ইসলাম,( খুলনা জেলা সংবাদদাতাঃ) ‘মানব পাচারের মামলা বাড়ছে, ভুক্তভোগীর দুর্ভোগ কমছে না’ ‘বাংলাদেশ থেকে যারা পাচারের শিকার হয় তাদের নব্বই শতাংশই নারী। এই নারীদেরকে দালালরা সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে পাচার করছে। আমাদের তাই প্রান্তিক নারীদের সচেতন করতে হবে।’ বলে মন্তব্য করেছেন খুলনার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আজ রাজী।
সোমবার (৩০ জুন) খুলনায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের Combating Human Trafficking through Strengthening 4Ps project-এর উদ্যোগে আয়োজিত মানব পাচার প্রতিরোধে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীরা মামলা চালাতে পারছেন।
পাশাপাশি পাচারের শিকারদের পুনরেকত্রীকরণে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো এগিয়ে আসছে। এতে সমাজে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হচ্ছে।’ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) বেগম বুশরা সাইয়েদা। তিনি বলেন, ‘কঠোর আইন থাকলেও আমরা মানব পাচার রুখতে পারছি না। মামলার সংখ্যা বাড়লেও সাক্ষীর অভাবে পাচারকারীদের কঠিন সাজা হচ্ছে না।
মানব পাচারের মামলাগুলোর তদন্তে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।’ মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনার মহানগর দায়রা জজ মোঃ শরীফ হোসেন হায়দার। নিজ বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘পাচার রুখতে সচেতনতামূলক কাজের পরিধি আরো বাড়াতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে।’ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার অভিবাসন বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ,
বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিদেশ-ফেরত অভিবাসী ও মানব পাচারের শিকার হওয়া সারভাইভার এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা এবং সারা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এনজিও- ব্র্যাক, ১৯৭২ সালের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দেশে ও দেশের বাইরে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কর্মসূচি হল মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। ব্র্যাকের এই প্রোগ্রাম ২০০৬ সাল থেকে দেশের অভিবাসনপ্রবণ জেলাসমূহে বিদেশগামী নারী ও পুরুষের মাঝে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, অভিবাসন খাতে অ্যাডভোকেসি ও নানাবিধ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।