মোঃ রফিকুল ইসলাম খুলনা জেলা সংবাদদাতাঃ
ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় দেশব্যাপী বিএনপি’র চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরও প্রতিবাদ জানায় তারা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে শুরু হয়ে কটকা-হাদি চত্বর ঘুরে শহীদ মুগ্ধ তোরণ হয়ে ক্যাম্পাসের মেইন গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এই মিছিল শেষ হয়।
সমাবেশে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা মিটফোর্ডে চাঁদা না দেওয়ায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাসহ সারাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোর দ্রুত বিচার দাবি করেন।
এর আগে বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা “চাঁদাবাজের ঠিকানা—এই বাংলায় হবে না”, “সৈরাচারের ঠিকানা—এই বাংলায় হবে না”, “তারেক জিয়ার সৈনিক, চাঁদা তোলে দৈনিক” এরকম নানা ধরনের প্রতিবাদী স্লোগানের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের হুঁশিয়ার করে বলেন, “ছাত্রজনতা প্রয়োজনে আবার রক্ত দেবে, তবুও এই বাংলাদেশে কোনো ধরনের স্বৈরাচারের আশ্রয় হবে না।” তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুসজ্জিত পুলিশ বাহিনী থাকা সত্ত্বেও তাদের পতন হয়েছে। সুতরাং যারা অবাধে এ দেশে এ ধরনের নৃশংসতা চালাচ্ছেন, তাদের লাগাম ধরতে ছাত্রজনতার এক মুহূর্তও বিলম্ব হবে না।”
মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মুন্না জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণ করে বলেন, “আবু সাঈদ মুগ্ধের এই বাংলায় মধ্যযুগীয় বর্বর হত্যাকাণ্ড দেশের মানুষ মেনে নেবে না। খুন, গুম, রাহাজানি এসবের মাধ্যমে রাজনীতিকে এ দেশের মানুষ লাল কার্ড দেখিয়েছে। বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল যদি আবার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তবে তাদের বিচার এ দেশের ছাত্রসমাজ রাজপথেই করবে।”
বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দিপন পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন সোহাগ হত্যার দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে হবে, অভিযুক্ত মাহিন ও রবিনসহ সকল খুনিকে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, সারাদেশে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে অপরাধীদের রক্ষা করার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।