মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম(, খুলনা ব্যুরোঃ) দেশজুড়ে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ ও ছিনতাই, ধর্ষণ, মব সৃষ্টি করে নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। যৌথ বাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সাঁড়াশি অভিযানেও থামানো যাচ্ছে না এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড। ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুকন্যা থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত।
আবার লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স থামিয়ে ডাকাতির মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনাও ঘটছে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, সব ধরনের অপরাধ বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে, দেশে পটপরিবর্তনের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছিল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তা এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। ফলে অপরাধ কর্মকাণ্ড থামছে না। প্রায়ই চাঞ্চল্যকর অপরাধের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হচ্ছে।
এসব চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করলেই দেখা যায়, দিন দিন হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, ডাকাতি, দস্যুতা ও চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে দেশে এক হাজার ১৩৯টি ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা হয়েছে, যা গড়ে প্রতি মাসে ২২৮টি। গত বছর প্রতি মাসে এই সংখ্যা ছিল গড়ে ১৫৮।
এই পাঁচ মাসে হত্যা মামলা হয়েছে এক হাজার ৫৮৭টি, যা গড়ে প্রতি মাসে ৩১৭টি। আগের বছর প্রতি মাসে ছিল ২৮৬টি। নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় গত পাঁচ মাসে ৯ হাজার ১০০ মামলা হয়েছে, যা গড়ে প্রতি মাসে এক হাজার ৮২০টি।
আগের বছর গড়ে প্রতি মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের আইনে মামলা ছিল এক হাজার ৪৬৪টি। অপহরণের মামলা এই পাঁচ মাসে গড়ে প্রতি মাসে ৮৭টি; গত বছর প্রতি মাসে ছিল ৫৪টি। চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় এই পাঁচ মাসের মধ্যে গড়ে প্রতি মাসে ৯৮৫টি মামলা হয়েছে।
গত বছর প্রতি মাসে গড়ে ৯৪৫টি মামলা হয়েছে। অন্যদিকে দায়িত্ব পালন করতে গেলে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও বেড়েছে। পাঁচ মাসের মধ্যে গড়ে প্রতি মাসে পুলিশের ওপর ৫৭টি হামলার মামলা হয়েছে; আগের বছর এই সংখ্যা ছিল প্রতি মাসে ৫৪।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটা অবনতি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলো এখনো পুরোপুরি আগের মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে পারছে না। তাঁরা বলছেন, কোনো অপরাধের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তখন পুলিশ তা নিয়ে তৎপর হয়। এর বাইরে পুলিশ এখনো মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় গতে পারেনি।