মোহাম্মদ সিরাজুল মনির (চট্টগ্রাম ব্যুরো): শীতল হাওয়ায় প্রাণ দোলাতে সাগরের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য ভ্রমণ পিপাসুরা মৌসমের শীতকাল কে লক্ষ্য করে কক্সবাজারে ভিড় করতে শুরু করে। চলতি বছরেও তার কোন ব্যর্তয় ঘটেনি। ইতিমধ্যে হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে আসতে শুরু করে দিয়েছে।
সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ মনে প্রানে আনন্দ দেয় ভাই সারা দেশের ভ্রমণপিপাসুরা এক নজর সাগরের এই ঢেউ দেখতে ভিড় করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। সাগর দেখার পাশাপাশি হিমছড়ি পাহাড় সেন্টমার্টিন দ্বীপ সহ কক্সবাজারের অন্যান্য পর্যটন এলাকা গুলো ঘুরে দেখার জন্য পরিবার-পরিজন নিয়ে এই সময়ে চলে আসে।
আসিফুল ইসলাম নামের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন শীতের শুরুতে পর্যটকদের একটু ভিড় কম থাকে তাই এই সময়টাই চলে আসি সাগরের ঢেউ দেখতে। বিশেষ করে সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে হোটেল গুলোর রুম ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে থাকে। ভাই একটু কম বাজেট নিয়ে হলেও কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চলে আসি আমরা বন্ধুরা মিলে। বগুড়া জেলার বাসিন্দ ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে হাফিজুল ইসলাম বলেন নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে কক্সবাজারে বাড়তি খরচ হয়। তখন হোটেল হোটেল গুলো এবং খাবারের দাম দ্বিগুণ করে ফেলে ব্যবসায়ীরা তাই একটু আগেভাগেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে চলে আসলাম।
কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার সবচেয়ে বলেন কক্সবাজারে মৌসুম কেন্দ্রিক ব্যবসা হওয়াতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৌশলে রুম ভাড়া এবং খাবারের দাম বাড়িয়ে দেন। জেলা প্রশাসন এবং হোটেল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে বিভিন্ন সময় হোটেল ও খাবারের রেস্টুরেন্ট গুলোতে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে পর্যটন এলাকায় চলাফেরা করতে পারে তার দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়। তবে পর্যটকদেরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মোহাম্মদ ইসকান্দর নামের এক হোটেল ম্যানেজার বলেন অতি লোভে কিছু হোটেল মালিক শীত মৌসুম বিশেষ করে ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে তাদের রুম ভাড়া ডাবল করে দেয়। নতুন বছরের শুরুতে এটা আরো দিগুন বেড়ে যায়। আমরা হোটেল মালিকদের অর্ডার পালন করতে হয়।
হোটেল মালিকদের কথা মতো বাড়তি দেখা হবে না করলে চাকরি দেখে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বলেও তিনি জানান। এ বিষয়ে শফিউর রহমান নামের এক হোটেল মালিক বলেন অনেক পটের মালিক বাড়তি ভাড়া আদায়ের নামে অবৈধ কাজ করার খবর আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে হোটেল মালিক সমিতি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সব সময়।
এ বিষয়ে কক্সবাজার এর জেলা প্রশাসক মোঃ সালাহউদ্দিন বলেন শীতের মৌসুমে কক্সবাজার এলাকায় পর্যটকরা বেশি আসে। তাই সুযোগ বুঝে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী হোটেলের রুম ভাড়া এবং খাবারের দাম বৃদ্ধি করে। এ ধরনের কোন অভিযোগ জেলা প্রশাসনে আসলে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে জেলা প্রশাসনের টিম। কোন পর্যটক যাতে বিপদে না পড়ে সেদিকে সব সময় জেলা প্রশাসনের নজর থাকবে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে সব সময় তদারকিতে থাকবে মাঠ প্রশাসন। জেলার হোটেল মোটেল খাবারের দোকান সহ অন্যান্য বিষয়ের কোন অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি জেলা প্রশাসনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহিত করার জন্য তিনি পর্যটকদের আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলার দায়িত্বরত টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার বলেন কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে টুরিস্ট পুলিশ সব সময় বদ্ধপরিকর। পর্যটন এলাকায় কোন অনিয়ম দেখলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। কোন ধরনের ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে আগত পর্যটকদের যে কোন অনিয়মের বিষয়ে জানানোর জন্য পর্যটকদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।