মো: সিরাজুল মনির (চট্টগ্রাম ব্যুরো): চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামী থানা কর্তৃক একটি মামলার রুজুর ৮ ঘণ্টার মধ্যে শারমিন আখতার হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায় জেলার ভুজপুর থানাধীন জঙ্গল খইয়া গ্রামের আলতাফ আলীর পুত্র মোহাম্মদ সেলিম বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার বর্তমান ঠিকানা জাহেদাবাজ চা বাগান, চালিতাতলী কলোনী, থানা-ভূঁজপুর, জেলা-চট্টগ্রাম সে পেশায় একজন চা বাগানের শ্রমিক।
বাদীর মেঝ মেয়ে ভিকটিম শারমিন আক্তার (২৮) এর সহিত আসামী মোঃ মকবুল প্রঃ মঙ্গল (৩৮) এর বিগত ১০ বছর পূর্বে বিবাহ হয়। তাদের দম্পত্য জীবনে দুই ছেলে ও একমেয়ে আছে। উক্ত আসামী প্রায় সময় সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাদীর মেয়ে ভিকটিমকে মারধরসহ মানসিক নির্যাতন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
বাদীকে ভিকটিম তার স্বামীর এমন কর্মকান্ডের বিষয়ে জানালে ও তাদের সংসারের কথা চিন্তা করে বাদীর পরিবার তা সহ্য করতে থাকে। সর্বশেষ গত ৬ অক্টোবর মাগরিবের নামাজের পরে স্বামীর অত্যচার সহ্য করিতে না পেরে ভিকটিম স্বামীর বর্তমান ঠিকানার বাসা হতে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে ৭ অক্টোবর সকাল অনুমান ১১ টার সময় ভিকটিমের স্বামী আসামী মোঃ মকবুল প্রকাশ মঙ্গল বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন মোহাম্মদনগর ৫নং রোডস্থ মোহাম্মদ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পাকা রাস্তার উপর ভিকটিম শারমিন আক্তারকে পেয়ে তার সঙ্গী সহ অজ্ঞাত ২/৩ জন আসামীর সহযোগীতায় ভিকটিমকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিমের পরিহিত ওড়না প্যাচাইয়া ভিকটিমকে টানা হেঁচড়া করে উক্ত আসামীর মায়ের ভাড়াঘর তথা বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন শান্তিনগর ৫নং রোড ডাক্তার গুলশানআরা প্রকাশ মিনুর ভাড়াঘরে নিয়ে যায় এবং একই তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ৭ টার সময় বাদীর মেয়ে ভিকটিম শারমিন আক্তার মৃত্যু বরণ করেন। উক্ত ঘটনায় বাদীর লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার মামলা নং- ০৬, তাং- ০৮/১০/২০২৪ইং, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড মামলা রুজু হয়। বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ ময়না তদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ এর নির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের তত্বাবধানে, অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ আরিফুর রহমান এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই(নিঃ) জসীম উদ্দীন অফিসার ফোর্স সহ অভিযান পরিচালনা করে ৮ অক্টোবর ভোর রাতে এবং সকাল বেলা বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন শান্তিনগর এলাকা হতে মামলার প্রধান আসামী ভিকটিমের স্বামী মোঃ মকবুল প্রকাশ মঙ্গল (৩৮)সহ মামলার ঘটনায় জড়িত অপর আসামী শিউলি আক্তার (৩০) আটক করতে সক্ষম হয়। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার ঘটনায় জড়িত অপরাপর পলাতক আসামীদের সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। মামলাটি তদন্তাধীন। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হল মোঃ মকবুল প্রঃ মঙ্গল (৩৮), পিতা-মৃত মোঃ খুরশিদ মিয়া, মাতা-মাজেদা খাতুন, সাং-শাহেদাগুপ, মাইজপাড়া, জরুদ্দি বাড়ী, ডাকঘর-সোনাকান্দা, থানা-বাঙ্গরা বাজার, জেলা- কুমিল্লা, বর্তমানে-মাঝের ঘোনা, ছিন্নমূল, কুমিল্লা ঘোনা, সোহেলের বাড়ী, থানা-বায়েজিদ বোস্তামী, জেলা- চট্টগ্রাম। শিউলি আক্তার (৩০), স্বামী-মোঃ সাগর, পিতা-মৃত আব্দুর রশিদ, মাতা-মৃত হাছিনা বেগম, সাং-শাহেদাগুপ, মাইজপাড়া, জরুদ্দি বাড়ী, ডাকঘর-সোনাকান্দা, থানা-বাঙ্গরা বাজার, জেলা- কুমিল্লা, স্বামী ঠিকানা-কোনা কাটা বাচ্চু মিয়ার বাড়ী, থানা- নবীনগর, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া।