মোঃ হাসান ,(লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা): রায়পুর বাজার বণিক সমিতির সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন শুধু বিজয়-পরাজয়ের হিসাবেই সীমাবদ্ধ রইল না। রয়ে গেল এক বিরল সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের উদাহরণ হিসেবে। নির্বাচনে নবনির্বাচিত সভাপতি সাইফুল ইসলাম মুরাদ আজ রবিবার (৬ জুলাই) ছুটে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. ইব্রাহিম খানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এই সৌজন্য সাক্ষাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সাড়া ফেলেছে।
অনেকেই লিখছেন, রাজনীতির বা সংগঠন-নির্বাচনের মাঠে এমন উদার মানসিকতা এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক খুব বেশি দেখা যায় না। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আশা করি এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চিরস্থায়ী হবে।
বাস্তবে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহযোগী হবেন তারা।” প্রসঙ্গত, রায়পুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন ছিল অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। মোট ১,৬২৬ ভোটের মধ্যে সাইফুল ইসলাম মুরাদ পেয়েছেন ৭১৩ ভোট, আর আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. ইব্রাহিম খান পেয়েছেন ৬৩০ ভোট। মাত্র ৮৩ ভোটের ব্যবধানে ইব্রাহিম খান পরাজিত হন। তবে ভোটের ফলাফলের পরও কোনো বিভাজন বা বিদ্বেষ তৈরি হয়নি। বরং দুই প্রার্থীই একে অপরের প্রতি সৌজন্য ও সম্মানের নজির স্থাপন করেছেন। সাইফুল ইসলাম মুরাদ তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন তো একটি প্রক্রিয়া মাত্র।
আজ আমি জিতেছি, কাল অন্য কেউ জিততে পারে। আমাদের আসল পরিচয়—আমরা সবাই এই বাজারেরই মানুষ। ব্যবসা, উন্নয়ন এবং সমিতির স্বার্থে সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে। অন্যদিকে, পরাজিত প্রার্থী মো. ইব্রাহিম খান বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেই আমি গর্বিত, কারণ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। নির্বাচনের এই ফলাফলের পর থেকেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তির হাওয়া বইছে।
অনেকেই বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হওয়ায় রায়পুর বাজার বণিক সমিতির এই নির্বাচন হয়ে থাকবে দৃষ্টান্ত। স্থানীয় ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, “আগে নির্বাচন মানেই ছিল দলে দলে বিভক্তি। কিন্তু এবার দুই প্রার্থীই পরস্পরের প্রতি যে সম্মান দেখিয়েছেন, তা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়।
আশা করি, সমিতির উন্নয়নে তারা একসঙ্গে কাজ করবেন।” রায়পুর বাজার বণিক সমিতির এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, মতের ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু সম্পর্কের সুতো ছিন্ন হয় না যদি প্রার্থীরা উদার মনের পরিচয় দেন। সাইফুল ইসলাম মুরাদ এবং মো. ইব্রাহিম খানের এই উদাহরণ নিঃসন্দেহে স্থানীয় রাজনীতি ও ব্যবসায়িক মহলে সৌহার্দ্য ও ঐক্যের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।