রঙ-বেরংয়ের পোশাকে সেজেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচছেন তারা। সঙ্গে ছিল মুখোশ, লোকজ ও প্রতিবাদের বিভিন্ন মোটিফ। এমন বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ কে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রাধান্য দিয়ে সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট আলাদাভাবে শোভাযাত্রা বের করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা সকাল ৯টায় বের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা কিছু জটিলতার কারণে সম্ভব হয়নি। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শোভাযাত্রাটি বের করা হয়।
এবারের শোভাযাত্রায় চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে গ্রামীণ ও লোকজ সংস্কৃতি এবং ফিলিস্তিন ইস্যুর বিভিন্ন মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শোভাযাত্রায় বাউল, বর-নববধূ, কৃষকসহ বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হন শত শত শিক্ষার্থী।
শোভাযাত্রাগুলো ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিজ নিজ আয়োজনে অংশ নেয়। এই আয়োজনে ছিল কবিতা আবৃত্তি, লোকসংগীত পরিবেশনা, গ্রামীণ মেলা ও পান্তা-ইলিশ।
শিক্ষার্থীরা জানান, পহেলা বৈশাখ শুধুমাত্র আনন্দ নয়, বরং সংস্কৃতি, প্রতিবাদ ও সম্প্রীতির বহিঃপ্রকাশ। নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক শান্তি ও শুভবুদ্ধি—এই কামনা করেছেন তারা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব বলেন, উৎসব মানুষকে কাছাকাছি করে। মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সহমর্মিতার সৃষ্টি করে। একটি দিবস বা উৎসবকে সামনে রেখে আমরা একত্রিত হই। এতে সামাজিক পরিসরের ভাব আদান-প্রদান ও পরিচয় শক্তিশালী হয়। এর প্রভাব জাতীয় জীবনে পড়ে। তেমনি বাংলা নববর্ষ আমাদের পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। প্রত্যেকটি উৎসবের যেমন ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি আছে, তেমনি বিভেদ সৃষ্টির সুযোগ আছে। আমরা অতীতে দেখেছি, উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রলুব্ধ ও নিজেদের তথাকথিত চিন্তাভাবনা গণমানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ন্যক্কারজনক প্রবণতা। চব্বিশ পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে চাই, এ ধরনের অনুশীলন জাতীয় জীবন থেকে দূরীভূত হয়েছে।