বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্টে অনন্য রেকর্ড গড়েন অস্ট্রেলিয়ান দুই নাইটওয়াচম্যান পেস বোলার জেসন গিলেসপি ও মাইক হাসি। তাদের সেই রেকর্ড ১৪ বছরেও অক্ষত আছে। ভাঙতে পারেনি কেউ।
২০০৬ সালে চট্টগ্রামে সেই টেস্টে হাবিবুল বাশার সুমনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ১৯৭ রানে অলআউট হয়। জেসন গিলেসপি সেই ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করেন।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে গিলেসপির ২০১ এবং মাইক হাসির ১৮২ রানের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটে ৫৮১ রানের পাহাড় গড়ে।
৩৮৪ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহরিয়ার নাফীসের ৭৯, মোহাম্মদ রফিকের ৬৫ আর হাবিবুল বাশার সুমনের ৪৯ রানের ইনিংসে ভর করে ৩০৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
৮০ রানের জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০তে নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।
সেই ম্যাচে গিলেসপি নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামেন, ফিল জ্যাকসও ১৭ ওভার পর আউট হয়ে যান এবং পন্টিংকে মাঠে নামতে হয়। বৃষ্টির কারণে খেলা ব্যাহত হয় এবং দ্বিতীয় দিনের শেষে গিলেসপি ২৮ রানে অপরাজিত থেকে ড্রেসিং রুমে ফেরেন।
পরের দিন লাঞ্চের পর খেলা শুরু হলে গিলেসপি আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যাট করেন। গিলেসপি ও পন্টিংয়ের ভুল বোঝাবুঝিতে পন্টিং রানআউট হয়ে যান। দুই জনে মিলে ৯০ রানের পার্টনারশিপ করেন। এরপর মাইকেল হাসি মাঠে নামেন। তখন গিলেসপি ১৫৮ বলে ৫০ রান পূর্ণ করেন। চা বিরতির আগে শেষ ওভারে গিলেসপি একটি দুর্দান্ত কভার ড্রাইভ মেরে ২৯৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
ম্যাচের চতুর্থ দিনে সূর্যের আলো দেখা যায় এবং গিলেসপি হাসির সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন। দুজনেই চমৎকার ব্যাটিং করেন এবং সময়ে সময়ে বলকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের ক্লান্ত করে দেন। এক সময়ে গিলেসপি এবং হাসি দুজনেরই স্কোর ছিল ১৭০। মনসংযোগ হারিয়ে ১৮২ রানে আউট হয়ে যান তিনি।
কিন্তু গিলেসপি দৃঢ়তা দেখিয়ে ব্যাট চালিয়ে যান। রিকি পন্টিং চাইলেই ইনিংস ডিক্লেয়ার করতে পারতেন কারণ লিড যথেষ্ট ছিল, কিন্তু তিনি গিলেসপিকে ডাবল সেঞ্চুরি করার এবং ইতিহাসে নাম লেখানোর সুযোগ করে দেন। অবশেষে গিলেসপি তার ইনিংসের ৪২৫তম বলে আরেকটি বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্রিকেটে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন।
গিলেসপির ২০১ এবং হাসির ১৮২ রানের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটে ৫৮১ রান করে। ৩৮৪ রানের লিড নিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৪ রানে অলআউট করে এবং ম্যাচটি ৮০ রানে জিতে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের নামে করে। জেসন গিলেসপি ম্যাচ সেরা এবং সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন।