মোঃ গিয়াস উদ্দিন বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা): মোল্লাহাটে সরকারি রাস্তার ইট গোপনে বিক্রি: রানিং তিন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
সম্পৃক্ত বর্তমান ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি স্থানীয়দের!
বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার ৫নং গাওলা ইউনিয়নের চাঁদের হাট এলাকায় সরকারি রাস্তার পুরনো ইট গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা তিনজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, এদের মধ্যে কেউ কেউ পূর্বের সরকার আমলেও বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ছিলেন এবং এখনও তারা একই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুবিধাভোগ করে চলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদের হাট সংলগ্ন প্রায় ৬০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সরকারি ইটের রাস্তার পুরনো ইট তুলে গোপনে বিক্রি করা হয়েছে।
বিক্রিত ইটের পরিমাণ আনুমানিক ৮ হাজার ৫০০টি। বাজারদরে প্রতি হাজার ইট ৭ হাজার টাকা হিসেবে এই বিক্রির আর্থিক পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সরকারি অনুমতি, টেন্ডার বা দাফতরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, ইউপি সদস্য ঈশ্বর রায় (৯নং ওয়ার্ড), ভবেন মণ্ডল (৮নং ওয়ার্ড) ও নীলপদ বিশ্বাস (৭নং ওয়ার্ড)—তিনজনই সরাসরি এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয়দের দাবি, তারা নিজেরা রাস্তাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ও কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করার সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পুরনো ইটগুলো বিক্রি করেছেন। ইট বিক্রির অর্থও তাদের হেফাজতেই রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্বাধীন কাগজের বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ইট বিক্রির স্থান, বোঝাইয়ের সময় এবং গন্তব্যস্থল সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিওসহ একাধিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এসব প্রমাণে দেখা যায়, ইটগুলো বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“এই রাস্তাটির পুরনো ইট যেভাবে বিক্রি হয়েছে, তা পুরোপুরি গোপনে। এটা তো সরকারের সম্পদ—এইভাবে বিক্রি করা মানে তো চুরি।”
অভিযোগের বিষয়ে দুইজন ইউপি সদস্যের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ইট বিক্রির কথা স্বীকার করেন। তবে তারা দাবি করেন,
“পুরনো ইট বিক্রি হয়েছে ঠিকই, তবে এতে কোনো অনিয়ম হয়নি।”
তবে স্থানীয় সচেতন মহলের ভিন্ন মত। তারা বলেন, এই ধরনের গোপন ইট বিক্রি শুধু উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা বিনষ্ট করছে না, বরং তৃণমূল পর্যায়ে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে।
তারা অবিলম্বে এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
