জয়নাল আবেদিন (শেরপুর জেলা সংবাদদাতা): শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার ১ নম্বর গণপদ্দী ইউনিয়নে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে অনিয়ম, জমি দখল, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জনসাধারণকে জিম্মি করে রেখেছেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক ও সেনাবাহিনীর পরিচয় ব্যবহার করে নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। তার ছেলে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ক্যাপ্টেন শাকিব নামে পরিচিত হলেও, স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে, এই পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন। এমনকি তার পুত্রবধূ নিজেকে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে থাকেন, যা এলাকার মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
সরকারি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ
স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্পেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কাবিটা কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ পাওয়া “জয়নাল খেত হতে আজর আলী বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার” প্রকল্পটি গণপদ্দী ইউনিয়নের আওতায় থাকলেও বাস্তবে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে নালিতাবাড়ী উপজেলায়। বিষয়টি স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার ও প্রকল্প সভাপতি মো. বেলাল হোসেন।
টিসিবি, বিজিডি-বিজিএফ ও ভিজিএফ বিতরণে অনিয়ম
অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান আবুল হোসেন তার ভাইকে টিসিবি ডিলার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পণ্য বিতরণে অনিয়ম করেছেন। অনেক ভোক্তাই সঠিকভাবে পণ্য না পেয়ে অভিযোগ করেছেন, তাদের কার্ড ব্যবহার করে পণ্য কালোবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
বিজিডি ও ভিজিএফ কর্মসূচিতেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। নাম ভুয়া করে কার্ড বরাদ্দ, পণ্য বিক্রি, অসহায় মানুষের প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত করা—এগুলো নিয়মিত অভিযোগ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জমি দখল ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ
একটি বিএনপি পরিবারের জমি আদালতের মাধ্যমে ফেরত পেলেও, অভিযোগ রয়েছে যে, স্থানীয় সন্ত্রাসী চক্র দিয়ে সেই জমিতে পুনরায় দখলের চেষ্টা করা হয়েছে এবং পরিবারটিকে হুমকি প্রদান করা হয়েছে যেন তারা ওই জমিতে প্রবেশ না করে।
গাছ ও স্কুল ভবনের ইট বিক্রির অভিযোগ
স্থানীয় সূত্র মতে, গণপদ্দী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুলের বড় গাছ ও ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পুরনো ভবনের ইট খোলাবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব কর্মকাণ্ড স্থানীয় প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে চলছে।