সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-বিচার
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইসলাম
  8. ঈদুল ফিতর
  9. ক্যাম্পাস
  10. ক্রিকেট
  11. খুলনা
  12. খেলা-ধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. জাতীয়
  15. ঢাকা

বীজ সংকটে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা

প্রতিবেদক
স্বাধীন কাগজ
ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ ৯:০৬ অপরাহ্ণ   প্রিন্ট সংস্করণ

এ কে এম আজহারুল ইসলাম সবুজ (গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা) :  বোরো বীজ ধানের দাম বেড়েই চলেছে। গত মৌসুমের তুলনায় এবার কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বিএডিসির সরবরাহ কম থাকায় ৫৬ টাকা কেজির বীজ ধান বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। সাদুল্লাপুর উপজেলার হাট-বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুর রব সরকার জানান, বীজ বপন শুরু হয়েছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। উৎপাদন কিংবা সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ না থাকায় পছন্দের বীজ ধান সংগ্রহের জন্য কৃষকরা বাজারমুখী। এ সংকট নিরসনে বীজ সংক্ষণ প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা। বীজ ধানের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে বোরোর আবাদ কমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন বড় জামালপুর গ্রামের কৃষক রিজু মিয়া।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, উচ্চ দামে বীজ ধান কিনে ফসল ফলালে নিশ্চিতভাবেই উৎপাদন খরচ বাড়বে। সঙ্গে হালচাষ, সার-কীটনাশক, সেচ বিল ও দিনমজুর বাবদ বাড়তি টাকা গুনতে হবে। এদিকে কর্তনের সময় ধানের দাম কমে গেলে ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব খেয়াল করে না। কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলায় ১৫ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ জন্য প্রস্তুত প্রায় ৬৩ হাজার কৃষক। বীজতলা হবে ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। এর জন্য প্রয়োজন ৪৮০ টন বীজ ধান। বিএডিসি ডিলার সমিতির সভাপতি আক্কাস আলী বলেন, উপজেলায় ডিলারপ্রতি মাত্র ৮০ থেকে ১০০ বস্তা বীজ ধান সরবরাহ হয়েছে। কৃষক পর্যায়ে ১০ কেজির এক বস্তা বীজ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৬০ টাকায়। তাতে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৫৬ টাকা। তবে সরবারাহ অপ্রতুল।

চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে সাদুল্লাপুরের কৃষকের জন্য প্রণোদনার ১০ টন হাইব্রিড জাতের বীজ ধান বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে জানান অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া। এই বীজ ধান ৪ হাজার ২০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।

২৫ জন ডিলারের মাধ্যমে বিএডিসির ৫০ টন বীজ ধান বিক্রি হচ্ছে। কৃষক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী প্রকল্প থেকে সংরক্ষণে থাকা বীজ ধান পাওয়া যাবে প্রায় ৮০ টন। সাদুল্লাপুর বাজারের বীজ ব্যবসায়ী সুজন কুমার সরকার দশটি কোম্পানির বীজ ধান বিক্রি করেন। তিনি জানান, কোম্পানিভেদে দাম কিছুটা কমবেশি হয়।

তবে এবার সব কোম্পানিই বীজ ধানের দাম বাড়িয়েছে। কৃষকরা হাইব্রিড জাতের বীজ ধান বেশি কিনছেন। বীজ ধান কিনতে আসা তরফমহুদি গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, বাজারে চকচকে প্যাকেট দেখে আসল-নকল চেনার উপায় নেই। এ সব বিষয়ে ধারণা নিতে সরকারিভাবে কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা উচিত। পাশাপাশি কর্তন মৌসুমে বীজ ধান সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বাড়াতে হবে প্রণোদনার পরিমাণ।

বিএডিসি গাইবান্ধা অফিসের স্টোরকিপারের দায়িত্বে থাকা উজ্জ্বল কুমার সরকার বলেন, চলতি মৌসুমের বীজ ধান ডিলারদের কাছে দেওয়া হয়েছে। এবার আর বরাদ্দ আসার সম্ভাবনা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বীজ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করলে কৃষক উপকৃত হবেন।

নতুবা প্রতি বছর বাড়বে বীজ ধানের দাম। কোম্পানিগুলো তাদের ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে।

তারা প্যাকেটের গায়ে দাম লাগিয়ে কৃষকের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। নিরুপায় কৃষকরা বাধ্য হয়ে উচ্চ দামেই বীজ ধান কিনছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, খোলাবাজার থেকে বীজ ধান কিনলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলন নিয়েও ভাবতে হয়। বাজার মনিটরিং চলছে। দোকানের রসিদমূলে বীজ ধান কিনে প্যাকেট সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রতারণার প্রমাণ পেলে বিক্রেতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ - সংবাদ

আপনার জন্য নির্বাচিত