উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কিশোরগঞ্জসহ দেশের দূর-দূরান্তের হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন।
শনিবার সকাল ৯টায় ঐতিহাসিক এ ঈদগাহে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। নামাজ শেষে দেশের সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
কিশোরগঞ্জের শহরের উপকণ্ঠে নরসুন্দা নদীর উত্তর পার্শ্বের বিস্তীর্ণ তীরজুড়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। ২০০ বছর আগে ইসলামের বাণী প্রচারে সুদূর ইয়েমেন থেকে আসা শোলাকিয়া জমিদার বাড়ির পূর্ব পুরুষ সুফি সৈয়দ আহমেদের হাতে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গোড়াপত্তন ঘটে।
ইসলাম ধর্মপ্রচারক সুফি সাধক সৈয়দ আহমেদের ইমামতিতেই উপমহদেশের প্রথম সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এখানে। সেবার ওই জামাতের কাতার গণনায় সোয়া লাখ মুসল্লির উপস্থিতির কথা জানা যায়। আর তখন থেকে এ ঈদগাহ ময়দানটি সোয়া লাখিয়া ঈদগাহ ময়দানের নামের স্বীকৃতি পায়।
পরবর্তীতে উচ্চারণ বিবর্তনের ফলে এক সময় সোয়া লাখিয়া থেকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান হিসেবেই পরিচিত হয়ে ওঠে। তখন থেকেই এ ঈদগাহ ময়দানের জামাতে দেশি-বিদেশি লাখো মুসল্লির সমাগম ঘটতে থাকে।
ঈদের জামাতে অংশ নিতে মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে সরকার ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা করে থাকে। এছাড়া লাখ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটায় রেওয়াজ অনুযায়ী নামাজ শুরুর আগে বন্দুকের (বর্তমানে শটগানের) ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এর মাধ্যমে ঈদগাহের সবাইকে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হয়।