মোঃ রফিকুল ইসলাম (খুলনা জেলা সংবাদদাতা): ‘ইমপ্যাক্টফুল ইউনিভার্সিটি’ গড়তে কোলাবরেটিভ রিসার্চ ও বাস্তবমুখী শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন (এমবিএ) স্কুলের উদ্যোগে আজ ০৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ‘Empowering the Future with Industry-Academia Synergy’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যে চারটি ডিসিপ্লিন নিয়ে একাডেমিক যাত্রা শুরু করেছিল, তার মধ্যে ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন অন্যতম। দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবসায় প্রশাসন শিক্ষার পথিকৃৎ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে এই ডিসিপ্লিন চালু করেছিল, যা আজও গুণগত শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় আধুনিক ও সময়োপযোগী শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে এসেছে।
আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ‘ইমপ্যাক্টফুল ইউনিভার্সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলা। যা জ্ঞান সৃষ্টির পাশাপাশি সমাজে বাস্তব পরিবর্তন আনয়নে ভূমিকা রাখবে। এজন্য আমাদের কোলাবরেটিভ রিসার্চ, উদ্যোক্তা বিকাশ এবং ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া অংশীদারিত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। উপাচার্য বলেন, বর্তমান সময়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও বাস্তবমুখী শিক্ষা নিশ্চিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবরেশন জরুরি। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের শিল্প খাতে উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এক্সপোজার বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এন্ট্রেপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্টের জন্য বিজনেস ইনকিউবেটর তৈরিতে বাংলাদেশ সরকারের হিট প্রকল্পের অধীন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ইনোভেশন হাবের অধীনে বেশকিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে। এই সেমিনার আয়োজন শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিল্প খাতের সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও কার্যকর হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক দক্ষতা, বিশ্লেষণী চিন্তাশক্তি ও উদ্ভাবনী মানসিকতাও শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হলে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে হতে হবে আরও বাস্তবমুখী ও কর্মক্ষমতাভিত্তিক। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু জ্ঞান উৎপাদনের কেন্দ্র নয়, বরং দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও গড়ে তুলতে হবে।
এই লক্ষ্য পূরণে একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব অপরিহার্য। সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নূর আলম এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেমিনার আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. এস এম তৌহিদুর রহমান।
আরও বক্তব্য রাখেন সেমিনারের রিসোর্স পারসন ওটিসি লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেওয়ান আতিফ রশিদ, মার্কটেল বাংলাদেশ লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও ড. মো. শরিফুল ইসলাম দুলু এবং মেটলাইফ বাংলাদেশ এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ কর্পোরেট বিজনেস অফিসার, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ’২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাফরিন জাহান তাসিন।
সেমিনারের দ্বিতীয় পর্বে টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রিসোর্স পারসনগণ ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দক্ষ ও প্রস্তুত করে গড়ে তোলার নানা দিক তুলে ধরেন। এ সেমিনারে ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলভুক্ত ডিসিপ্লিনসমূহের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনেরা অংশগ্রহণ করেন।