মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (খুলনা জেলা সংবাদদাতা): মানব পাচার একটি বৈশ্বিক সমস্যা। যার শিকার হয় অসংখ্য নিরীহ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। মানব পাচার, পাচার হওয়া ভিকটিম সনাক্তকরণ, নিরাপদ অভিবাসন এবং বাল্যবিবাহর মত সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধ কিংবা নিয়ন্ত্রণ করা খুব সহজ কাজ নয়। তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে।
এ লক্ষ্যে আজ ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখ সকাল ৯:৩০ ঘটিকায় মানবাধিকার সংস্থা জাস্টিস এন্ড কেয়ার আয়োজনে নগরীর বয়রাস্থ পুলিশ লাইন্স ডাইনিং লাউঞ্জে “Capacity Building Training for Khulna Metropolitan Police Officers on the Prevention and Suppression of Human Trafficking” শীর্ষক একদিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে তুলে ধরা হয় মানব পাচারের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও চ্যালেঞ্জ, পাচার চক্রের ধরন ও কৌশল, পাচার প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইন, পাচার হওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণ ও সহায়তা পদ্ধতি, প্রমাণ সংগ্রহ, মামলা পরিচালনা ও আইনি পদক্ষেপ, ভিকটিম-সংবেদনশীল (victim-sensitive) তদন্ত ও আচরণ পদ্ধতি।
এছাড়াও মানব পাচার রোধে জনগণের সচেতনতা বাড়ানো, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা, তথ্যভিত্তিক তদন্ত এবং দ্রুত বিচার এবং সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার বলেন, একটা মানুষ যখন পাসপোর্ট ছাড়া অন্য দেশে পাচার হয় তাকে চিহ্নিত করে উদ্ধার করাটা অনেক কঠিন কাজ। মানবাধিকার সংস্থা জাস্টিস এন্ড কেয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টার মাধ্যমে পাচার হওয়া ভিকটিম সনাক্তকরণ এবং উদ্ধার করে। ভিকটিমদের তাদের পরিবারের নিকট ফিরতে সাহায্য করে এবং আইনী সহায়তাও প্রদান করে।
এধরনের মানবিক কাজের জন্য তাদেরকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। মানব পাচার প্রতিরোধে শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ নয়, পুলিশের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, এনজিও ও মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানব পাচার প্রতিরোধে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পেশাদারিত্ব ও মানবিকতা উভয় ক্ষেত্রেই উন্নয়ন ঘটাবে এবং সমাজে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ফিন্যান্স) আবু রায়হান মোহাম্মদ সালেহ, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাস্টিস এন্ড কেয়ারের ডেপুটি ম্যানেজার এবিএম মহিদ হোসেন, হেড অব প্রোগ্রাম মোঃ সিরাজউদ্দিন, প্রোগ্রাম অফিসার আল্ মমিন-সহ খুলনা জাস্টিস এন্ড কেয়ারের কর্মকর্তা এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।