তানজিলা শাহ্ রূবী (নেত্রকোণা জেলা সংবাদদাতা): নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামোর ২৪-২৫ অর্থবছরের টি আর ও কাবিটা প্রকল্পের বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ টি আর ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় উপজেলাওয়ারী ১ম-২য় ধাপের বরাদ্দকৃত নগদ অর্থের প্রকল্পের বাস্তবায়নে বানিয়াজান ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের চারটি প্রকল্প উপজেলা শিশু পার্ক উন্নয়ন তিন লক্ষ ৯০ হাজার এবং উপজেলা পরিষদ খেলার মাঠ সীমানা প্রাচীর বরাবর গর্ত ভরাট তিন লক্ষ ৫০ হাজার টাকা যার সভাপতি ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান। অপর দুটি উপজেলা প্রশাসন বিদ্যানিকেতন স্কুলের মাটি ভরাট ও ঘর মেরামত এবং উপজেলা বিদ্যানিকেতন স্কুলের ঘর মেরামত এর পিআইসি'র সভাপতি ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হাজী মোঃ আব্দুল কদ্দুছ।
যার চারটি প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ১৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। এছাড়া চারটি প্রকল্পের মাটি মগড়া নদী হতে এনেছে যা নিয়মবহির্ভূত, খেলার মাঠের সীমানা গর্ত ভরাট যেন পুকুর চুরি করার মতো , যা দেখার কেউ নেই। এ চারটির প্রকল্পের পরিবহন ও ভেকু এবং একটি ফ্লোরসহ টিন সেট ঘর যদিও অনেক জায়গায় ফ্লোর ফেটে গেছে ও কিছু পুরনো টিন ও ব্যবহার করা হয়েছে।
সচেতন মহলের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফেব্রুয়ারির দিকে নদীটি শুকনো থাকে সে সময় এই মাটি ভেকু দিয়ে কেটে চারটি প্রকল্পের মধ্যে দিয়েছে ইউএনও নিজেই এই কাজগুলো করিয়েছে। প্রকল্পের স্বার্থে শুধু দু'জনকে প্রকল্প সভাপতি করেছে। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এই কাজ শুরু করেছে তখন প্রকল্পের আওতাধীন কাজ ছিল না , প্রকল্পের বরাদ্দ কাজ শেষ হওয়ার পরে এসেছে এটা সবাই জানে। খেলার মাঠের মাটি ভরাট করতে গিয়ে এলজিইডির একটি নতুন নির্মিত দেয়াল ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, এখনো পর্যন্ত তা মেরামত করা হয়নি। অথচ খেলার মাঠে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বরাদ্দের মধ্যে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে, শিশু পার্কেও এক থেকে দেড় লক্ষ্য টাকা খরচ হতে পারে বলে মনে করেন আটপাড়া উপজেলার অনেকেই।
এই চারটি প্রকল্প ছাড়াও আটপাড়া উপজেলার ২৪-২৫ অর্থবছরের কাজগুলোর গুণগতমান ভালো না ।অনেকেই নামে মাত্র কাজ করেছে তারপরও তাদের বিল নিতে কোন সমস্যা হয়নি । জেলা ও বিভাগীয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রকল্পের কাজ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এবং নদী থেকে মাটি নেওয়ার অনুমতি কিভাবে দিয়েছেন তার সঠিক বিচার দাবি জানান। উপজেলা প্রশাসন বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক হাজী মোঃ আব্দুল কদ্দুছ বলেন- দুটি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বরাদ্দের অনুযায়ী বিল ও উঠানো হয়েছে।
মাঠের মাটি চুক্তি দেওয়া হয়েছিল তারা মাটি কোথা থেকে এনেছে তা তিনি জানেন না। অপর ২ টির প্রকল্প সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, দুটি কাজ সম্পন্ন হয়েছে তবে এই দুটির কাজ তিনি করেননি করেছে উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তবে মাটি কোথা থেকে এনেছে সেটিও তিনি জানেন না। শুধু স্বাক্ষর করে টাকা উঠেছে। ৮ নং ওয়ার্ডের এর মেম্বার হয়ে তিন নং ওয়ার্ডে কিভাবে কাজ করেন সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, প্রকল্পের সভাপতিরা বরাদ্দ অনুযায়ী মাস্টার রোল দিয়েছে এবং সেভাবেই বিল দেওয়া হয়েছে ।
শিশু পার্কের ও মাঠের কাজ তিনি করেছিলেন কি না সে কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন , অন্য কেউ কাজ করার সুযোগ নেই ,প্রকল্প সভাপতিই কাজটি করবে। মাটি আনার বিষয় টি তিনি জানে না বলে জানান। এ ব্যাপারে আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুয়েল সাংমা বলেন, মাটি নদী থেকে এনেছেন যার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন তাতে বাঁধা কোথায়।
এক পর্যায়ে মাটির ব্যয়ের পরিমাণ করার জন্য ক্রয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীকে বলে "আপনার মাথা দিয়ে আনা হয়েছে"তারপর গণমাধ্যমদের মোবাইল আনসার সদস্য কে বলেন নিয়ে যেতে ।