বুধবার , ৩০ জুলাই ২০২৫ | ২১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-বিচার
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইসলাম
  8. ঈদুল ফিতর
  9. ক্যাম্পাস
  10. ক্রিকেট
  11. খুলনা
  12. খেলা-ধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. জাতীয়
  15. ঢাকা

ভুল সিদ্ধান্তে মাথাচাড়া দিতে পারে ফ্যাসিবাদ: তারেক রহমান

প্রতিবেদক
স্বাধীন কাগজ
জুলাই ৩০, ২০২৫ ৯:০৮ অপরাহ্ণ   প্রিন্ট সংস্করণ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অংশ নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত করার পক্ষে বিএনপি। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অগ্রাধিকার নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারছে কিনা এই মুহূর্তে তা একটি বিরাট প্রশ্ন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ নিতে ওতপেতে রয়েছে। সরকারের যে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রাপথকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। কাজেই এ ব্যাপারে সবাইকে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, থাকা প্রয়োজন।

বুধবার বিকালে সাভারের আশুলিয়ার শ্রীপুররে দারুল ইহসান মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে ‘শ্রমিক-ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-২০২৪ : নারকীয় আশুলিয়া’ স্মরণে এক প্রতিবাদ সভায় ভার্চুয়ালি তিনি এসব কথা বলেন।

গত বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পূর্বক্ষণে ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহতদের লাশ ভ্যানে করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ দিনটিতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনার স্মরণে বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে। সভায় মঞ্চে আশুলিয়ার সেই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞকে প্রতীকী উপস্থাপন করে ঢাকা জেলা বিএনপি।

সেখানে প্রতীকীভাবে দেখানো হয়-দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। পুড়ছে জুলাইয়ের সাহসী সন্তানরা। যাদের ৫ জন আগেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন, আহত একজন তখনো বেঁচে ছিলেন। সেই রক্তমাংসের ছয়জনকে কী বর্বরভাবে আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা। জুলাই-আগস্টে এমন ভয়ংকর নির্মমতায় মেতে উঠেছিল পতিত সরকার।

এদিকে সভায় হতাহত পরিবারের বর্ণনা সৃষ্টি করে এক আবেগঘন পরিবেশ। তারা সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কোনো ছাড় দেবেন না হাসিনাকে। আপনারা কেউ ছাড় দেবেন না। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, সরকার এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে জনগণের মুখাপেক্ষী করা গেলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। একই সঙ্গে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে। দেশের সর্বস্তরের জনগণ কয়েকজন মানুষের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য দেড় দশক ধরে নিশ্চয়ই আন্দোলন অব্যাহত রাখেননি। কিংবা জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানেও শহীদ হননি। জনগণ রাষ্ট্র, সরকার এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যই স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদকে হটিয়েছে, জীবন উৎসর্গ করেছে। সুতরাং সরকারে যখন যারাই থাকুক কেউ সরকার পরিচালনা করতে চাইলে তাদের অবশ্যই নাগরিকদের কথা শুনতে হবে। প্রতিটি নাগরিকের ভাষা বুঝতে হবে। কেউ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে হলে তাকে অবশ্যই জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। বিএনপি জনগণের ক্ষমতায়নের এই রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই শহীদদের কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়।

বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আশুলিয়া কিংবা অন্য কোনো সুবিধাজনক এলাকায় শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের আত্মত্যাগের সম্মানে একটি বিশেষ স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান তারেক রহমান।

গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শ্রমজীবী ও কর্মজীবী শহীদ পরিবারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শহীদরা শুধু একটি সংখ্যা নয়, একটি প্রাণের সমাপ্তির অর্থ একটি পরিবারের মৃত্যু। একটি স্বপ্ন সম্ভাবনার অবসান। তবে আপনাদের সন্তান-স্বজনের শহীদি মৃত্যু দেশ এবং জনগণকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। দেশ আপনাদের শহীদ সন্তানের কাছে ঋণী। প্রতিটি শহীদ পরিবারের প্রতি রাষ্ট্র এবং সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। কৃষক, শ্রমিক মেহনতি মানুষ যাতে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শ্রমজীবীদের অবদান নিয়ে গর্ব করতে পারে। শ্রমজীবী-কর্মজীবী শহীদ পরিবারের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সদস্যরা যাতে তাদের স্বজনদের শহীদি মৃত্যু নিয়ে গৌরব করতে পারেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্রেফ একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ রাজপথে জীবন উৎসর্গ করেননি সেদিন। এই জনগণ একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে, আকাঙ্খা নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। ফ্যাসিবাদ হটিয়ে রাষ্ট্র-রাজনীতিতে জনগণের আইনের অধিকার, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আশায়, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আশায় আত্মত্যাগ করেছিলেন। আজ যদি শ্রমজীবী, কর্মজীবী মানুষরা জানতে চান, সেই শহীদের আত্মা যদি জানতে চায়, পলাতক ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে বর্তমানে রাষ্ট্র সংস্কারের যে কর্মযজ্ঞ চলছে, সেখানেই বা তাদের প্রতিনিধিত্ব কোথায়। প্রতিটি নাগরিক যাতে নিজের কথাটি নিজে বলতে পারেন, নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন। জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নিজের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন কিংবা সরকার পরিবর্তন ঘটাতে পারেন-এই রাজনীতি বিএনপি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। একজন নাগরিকের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগের অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে নির্বাচন। প্রতিটি নাগরিক যাতে নিজের কথা নিজেই বলতে পারেন সেটি নিশ্চিত করার স্বার্থেই দেশে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি বারবার একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অগ্রাধিকার দেয়।

তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পেলে রাষ্ট্র এবং সরকারে জনগণের ইচ্ছা প্রাধান্য পাবে। রাষ্ট্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। রাষ্ট্র, রাজনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে জনগণ। জনগণকে দুর্বল রেখে রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার কিংবা সংস্কার কোনো কিছুকেই শক্তিশালী বা টেকসই করা সম্ভব নয়, করা যাবে না। নাগরিকদের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ এবং চর্চার মধ্যে দিয়েই রাষ্ট্র, রাজনীতি ও জনগণ শক্তিশালী হয়ে উঠে। রাষ্ট্রের জনগণ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠলে ভবিষ্যতে কেউ দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারবে না। আর দেশকে কেউ তাঁবেদার রাষ্ট্রেও পরিণত করতে সক্ষম হবে না।

তিনি আরও বলেন, দেড় দশকের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের হাজারো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে স্বৈরাচার এদেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শহীদ হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে সাভার-আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ওপরে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। হত্যার পরে লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। লাশের সঙ্গে এমন বর্বরতা, লাশের সঙ্গে এমন নির্মমতা মনে হয় কারবালার যে নৃশংসতা তাকেও হার মানিয়েছে। ৫ আগস্টের ফ্যাসিস্টদের পলায়নের দিন সাভার-আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ওপর, ছাত্র-জনতার ওপর যে গণহত্যা চলেছিল তা ছিল বর্ণনাতীত। বিএনপি তাদের স্মরণ করবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভেদ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আজকে অনেক রকম কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক বাদানুবাদ হচ্ছে। হবে-গণতন্ত্রে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এমন কোনো কিছু করবেন না যাতে আবার গণতন্ত্র ব্যাহত হয়। ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যে অবস্থায় আবার সেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা কোনো সুযোগ পায় দেশে ফিরে আসার। তাই আসুন আমরা অতি দ্রুত যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো মিটিয়ে ফেলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাই। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভারতে বসে বিভিন্ন অডিও বক্তব্যে আবারও বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছেন শেখ হাসিনা। এখন গোটা জাতি হাসিনার বিচার চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু এনজিওবাদ আজকে দেশ চালাচ্ছে। এখান থেকে কিভাবে মুক্তি নেবেন সেই পথনির্দেশনা দেবেন আমাদের নেতা-এটাই প্রত্যাশা করি।

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, সহ-পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ।

শহীদ পরিবারের মধ্যে বাবুল হোসেনের স্ত্রী লাকি আখতার, আরাফাত মুন্সির বাবা স্বপন মুন্সি, বায়েজিদ মুস্তাফিজের স্ত্রী রিনা আখতার, শ্রাবণ গাজীর বাবা আবদুল মান্নান গাজী, মামুন খন্দকার বিপ্লবের স্ত্রী খন্দকার সাথী, সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম, আরাফুর রহমান রাসেলের ভাই সায়েদুর রহমান বাবু, জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে পঙ্গু শান্ত তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরতে গিয়ে পুরো সভাস্থলকে আবেগময় করে তোলেন।

সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদদের পরিবারকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।

 

সর্বশেষ - সংবাদ

আপনার জন্য নির্বাচিত

কাজলা-শনির আখড়ায় ব্যাপক সংঘর্ষ, টোল প্লাজায় আগুন

‘নির্বাচন যদি শাসন কাঠামোর গুণগত পরিবর্তন না আনে, তা হবে গণঅভ্যুত্থান হত্যার শামিল’

শিক্ষার্থীদের জ্ঞান-বিজ্ঞানে অগ্রগামী ও চিন্তা চেতনায় প্রগতিশীল হতে হবে – শিক্ষা উপদেষ্টা

এন আই এক্টের মামলায় প্রধান শিক্ষক জেলে

খুলনায় বৃষ্টির কারণে ধ*সে পড়ল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ছাদ

তাইজুলের ৫ উইকেটের দিনটা বাংলাদেশের, তবে আফসোস রয়েই গেছে

মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী-নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, যেসব বিষয়ে আলোচনা হলো

এলপি গ্যাসের দাম কমলো

শেরপুরে চিরনিদ্রায় শায়িত অভিনেত্রী সীমানা

মাদারগঞ্জে দূর্নীতি বিরোধী বির্তক প্রতিযোগীতা-২০২৫ ইং