নিজস্ব সংবাদদাতা : নেত্রকোণা কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের কচন্দরায় খেলার মাঠে মাটি ভরাটের কাজ না করেই অর্থ আত্মসাতের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তানজিলা আক্তার রুবি। অভিযোগ ও এলাকা সূত্রে জানা যায় ,গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের কাবিটার বিশেষ বরাদ্দে নতুন খেলার মাঠের মাটি-ভরাটের জন্য ৩০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছিল এবং সেই প্রকল্পের পিআইসির ৭ সদস্য কমিটির সভাপতি ছিলেন ওই এলাকার ইলিয়াস মিয়ার ছেলে ইয়ার খান।
স্থানীয় এমপি স্বাক্ষরিত সুপারিশে প্রকল্পটির অনুমোদনের কিছুদিন পরেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় এই প্রকল্পের সম্পূর্ণ দায়ভার বা তদারকি করেন কেন্দুয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এমদাদুল হক। সে প্রকল্পের ১ম বিল ১০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে কাজ শুরু করেন। এদিকে বিলাউজির বিলে মাটি উত্তোলনের জন্য ২৪ জুন ২০২৪ লিখিত অনুমতি দিয়েছিল নির্বাহী কর্মকর্তা।
কিন্তু সেখানে মাটি উত্তোলন না হওয়ায় এবং বিভিন্ন চাপ থাকায় সেই কাজটি আর করা হয়নি।কিন্তু কেন্দুয়া নির্বাহী কর্মকর্তা , প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি ইয়ার খানের যোগসাজশে ওই প্রকল্পের কোন কার্যক্রম না করে ১০ লক্ষ টাকার খরচ দেখিয়ে বাকি ২০ লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয় বলে জানা যায় । ওই এলাকার কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, মাঠে কোন মাটি বা বালু উত্তোলন হয়নি। বিলাউজির বিল থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করতে চেয়েছিল সেখানে ড্রেজার দিয়ে বালু না আসায় মাঠে মাটি বা বালু ভরাট করতে পারেনি।
১০ লক্ষ টাকা কোথায় কি খরচ দেখিয়েছে কর্তৃপক্ষ ভাল জানেন। অভিযোগকারী তানজিলা আক্তার রুবি বলেন, বলার সময় ইউনিয়নের কসম ধারা গ্রামের বিশেষ বরাদ্দের মাঠ ভরাট কাজ দেখতে গেলে তখন ড্রেজার মেশিন বন্ধ পাওয়া যায় এবং মাঠ নির্ধারিত করার জায়গায় কোন মাটি কাটা হয়নি এর পরেও মেশিন চালু হয়নি তার মানে আর মাটি কাটাও হয়নি পরে জেলা প্রশাসককে তথ্য দিয়ে বিষয়টি জানালে উনি হয়তো নির্বাহী কর্মকর্তাকে বন্ধের নির্দেশ দিতে পারে তারপরে শুনি প্রকল্প বাতিল এবং কাজও বন্ধ তাহলে এর মধ্যে মাটি কাটলো কখন।
এর কিছুদিন পরেই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাছে মূলত বিষয়টি জানতে পারি ১০ লাখ টাকা খরচ বাবদ রেখে বাকি ২০ লক্ষ টাকা ফেরত দেন। তখন এর প্রমাণস্বরূপ কিছু তথ্য চেয়েছিলাম আদৌ কি টাকা ফেরত দিয়েছে কিনা বা ১০ লক্ষ টাকা কোথায় খরচ হয়েছে সে বিষয় কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া তথ্য তখন দেননি। উনার বিরুদ্ধে টি আর কাবিটা /কাবিখা এবং বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়েছে। ২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় ধাপের টিআর কাবিটার যে কাজগুলো এসেছিল তার তিনভাগের আড়াইভাগেই হয়নি অথচ অনেকেই বিল উঠিয়ে নিয়েছে। খেলার মাঠের আরো কিছু অনিয়ম ছিল যা বিস্তারিত অভিযোগে তোলা হয়নি। তাছাড়া বিলাউজির বিলে মাটি উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়াই উনি লিখিত অনুমতি দিয়েছেন যা নিয়ম বহির্ভূত। অভিযোগের ভিত্তিতে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে সততায় উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।
প্রকল্প সভাপতি ইয়ার খানকে কল দিলে তিনি রিসিভ না করে কল কেটে দেন। কেন্দুয়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুল জানান, মাঠে যে পরিমাণ কাজ করা হয়েছে সেই খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এলাকার লোকজন বলছে কোন মাটিকাটা হয়নি সে বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে অস্বীকার করে জানায় মাটিকাটা হয়েছে এবং যতো টাকার মাটি কাটতে খরচ করা হয়েছে তা রেখে বাকি টাকা ফেরত দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস ও নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক এঁর সাথে বারবার ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।