অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন বলেছেন, আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট আগামী জুনেই পেশ করা হবে। রোজার পর মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশের ঘরে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কাছে আশ্বস্ত করার খবর হলো যথাসাধ্য চষ্টো করছি রোজার সময় যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। রোজা ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে। সেজন্য নিরলসভাবে চষ্টো করে চাল, ডাল, চিনির সরবরাহ নিশ্চিত করছি। এখন তো চিনির দাম অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। বাকি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর মূল্য যাতে সহনীয় মাত্রায় আসে, সে বিষয়ে কর্মতত্পরতা রয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমি কয়েকদিন আগে বলেছি, যারা মজুত করবে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার শক্ত অবস্থান নেবে। দরকার হলে সেটা আমরা রিপিট করব। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ছাড়াও অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, প্রয়োজনে তারা সয়াবিন গুদামে খোঁজ নেবে। কেউ বেজমেন্টে লুকিয়ে রেখেছে কি না, তাও দেখা হবে। যে পরিমাণ আমদানি, সে হিসাবে তেলের সংকট হওয়ার কথা না। রোজার সময় যাতে কোনোভাবে দাম না বাড়ে, তা নিশ্চিত করার চষ্টো করছি।

 

উপদেষ্টা আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার জন্য সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে ১ শতাংশ কমেছে এবং ধারাবাহিকভাবে যেন কমে আসে। বাজেট দেওয়ার সময় যেন এটা সহনীয় পর্যায়ে আসে, সে চষ্টো চলছে। রোজার পর মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনার চষ্টো করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

 

বাজেটের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা অনেক চিন্তাভাবনা করেছি। অতীতে অনেকগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছে। কোনো সময়ই বাজেট অপেক্ষা করেনি। রিভাইস বাজেট তো আমাদের করতেই হবে। বাজেটটা আমরা জুনের মধ্যেই দেব।

ব্যবসায়ীরা বলেন এলসি খোলার ক্ষেত্রে তারা ডলার পান না। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের আপনারা ভালো করে চেনেন। আমি তো তাদের আরও ভালো করে চিনি। তারা কিন্তু অনেক সময় একপেশে কথাবার্তা বলেন। এক গ্রুপ এসে বলবে স্যার আপনি তো এটার ওপর ট্যাক্স দিয়েছেন বা কমিয়ে দিয়েছেন। আরেক গ্রুপ এসে বলবে, স্যার আপনি কমাইয়েন না, যা দিয়েছেন ঠিকই আছে। সুতরাং আমাকে চিন্তাভাবনা করে করতে হয়। বাজারে কিন্তু ডলারের সংকট নেই। আমাদের রপ্তানি বেড়েছে।

 

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন কারেন্ট ব্যালেন্স অ্যাকাউন্ট পজিটিভ অবস্থায় এসেছে। ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট পজিটিভ, এ অবস্থা ধরে রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা দরকার, এটা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।

বাংলাদেশে অর্থ পাঠানো নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এটা যদি আমাদের দেশের মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে হয়, কারও মোটিভেটেড কোনো ইসু্যতে এটা ব্যবহার করে, সেটা দেখার বিষয়। আমরা দেখব ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের মোটিভেশনাল কাজে টাকা না আসে।