এখন মধ্য আষাঢ়। তিন-চার দিন ধরে বর্ষার চিরচেনা রূপ দেখা যাচ্ছে দেশের প্রকৃতিতে। প্রায় সব অঞ্চলেই কমবেশি দেখা যাচ্ছে বর্ষার অঝোর ধারা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই অবস্থা থাকতে পারে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের সব বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণও হতে পারে।
আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত দেশের সব বিভাগে ভারি বর্ষণের আভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারি বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।
অধিদপ্তরের ভারি বর্ষণের সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, দেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় সব বিভাগের কোথাও আগামী বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। ভারি বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গত রবিবার মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষটি ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে ভারতের আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
লঘুচাপ না থাকলেও মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এর প্রভাবে সমুদ্রবন্দর ও উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে কক্সবাজার ও তিন সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
অধিদপ্তর সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমরা যে প্রবল বা ভারি বর্ষণ দেখছি, তা অব্যাহত থাকতে পারে ৫ জুলাই পর্যন্ত। এরপর বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে।’
আগের দিনের তুলনায় সোমবার সারা দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটাই বেশি ছিল। এদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের অন্তত ৫৫ জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে, ১৭৯ মিলিমিটার। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে এটি অতি ভারি (৮৯ মিলিমিটার বা বেশি) বৃষ্টিপাত।
দেশের আরো অন্তত ছয়টি জেলায় অতি ভারি বৃষ্টি হয়েছে এ সময়। বান্দরবানে ১১৯ মিলিমিটার, ভোলা ১০৭ মিলিমিটার, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১০০ মিলিমিটার, রাঙামাটিতে ৯৯ মিলিমিটার, নেত্রকোনায় ৯৬ মিলিমিটার ও হবিগঞ্জে ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় এ সময় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।