বৃহস্পতিবার , ১৭ এপ্রিল ২০২৫ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-বিচার
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইসলাম
  8. ঈদুল ফিতর
  9. ক্যাম্পাস
  10. ক্রিকেট
  11. খুলনা
  12. খেলা-ধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. জাতীয়
  15. ঢাকা

ইউনূস সরকারের কি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা সম্ভব? যা বলছেন বিশ্লেষকরা

প্রতিবেদক
স্বাধীন কাগজ
এপ্রিল ১৭, ২০২৫ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ   প্রিন্ট সংস্করণ

নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পেয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বিএনপি।

দেশের রাজনীতিতে নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি সন্দেহ যেমন বাড়ছে, একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের লম্বা সময় এমনকি পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার প্রসঙ্গ উঠছে। খবর বিবিসি বাংলা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, এর ফলে সরকারের সঙ্গে অংশীজনদের এবং সর্বোপরি রাজনীতিতে সন্দেহ-অবিশ্বাস ও বিভাজন বা দূরত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।

যার ফলে প্রশ্ন উঠছে, অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার বিষয় কেন আলোচনায় আসছে এবং ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা কি সম্ভব?

দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি নেতারা বলছেন, এ সরকারের বয়স আট মাস পার হলেও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না, সে কারণে তৈরি হচ্ছে সন্দেহ এবং উঠছে নানা প্রশ্ন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা অবশ্য পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোরও দায় দেখছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কেন আলোচনায়

গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। এ সরকার কতদিন ক্ষমতায় থাকবে, সেটা কখনো স্পষ্ট করা হয়নি।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান-এসব কর্মকাণ্ডের ওপরই অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নির্ভর করবে বলে একটা ধারণা রয়েছে সব অংশীজন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। এখন নির্বাচন ডিসেম্বরে নাকি আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে, এ নিয়ে বিতর্ক চলছে।

নির্বাচনের সময় নিয়ে এই বিতর্কের মধ্যে কিছুদিন ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার প্রসঙ্গে নানা আলোচনা চলছে সামাজিক মাধ্যমে। যেই আলোচনা সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ও রাজনীতিকদের কারও কারও বক্তব্য এতে নতুন মাত্রা যুক্ত করে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গত ১০ এপ্রিল সুনামগঞ্জ সফরে গিয়ে সেখানে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওই রাস্তা থেকে আমারে বলতেছিল, আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকেন।

তার এই বক্তব্য ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় কি না, এই প্রশ্ন তুলে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নির্বাচন প্রলম্বিত করার চেষ্টার অভিযোগ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে ইঙ্গিত করে তিনি এ-ও বলেন, দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চাইলে নির্বাচিত হয়ে আসেন। অনির্বাচিত কাউকে দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় মেনে নেবে না।

নির্বাচিত-অনির্বাচিত নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যেরও জবাব আসে সরকারের একজন উপদেষ্টার কাছ থেকে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার গত ১২ এপ্রিল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা অনির্বাচিত- এই কথা কে বলল? আমাদের তো ছাত্ররা, জনতা- যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে, তারাই সরকার গঠন করেছে, তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা।

এসব বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে বিতর্ক বা আলোচনা আরও বাড়িয়ে দেয়। যদিও আলোচনা-সমালোচনার মুখে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি সরকারের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলেননি। জনগণ তাকে বলেছে। যদিও তার এই বক্তব্য দেওয়ার পরও বিতর্ক থামেনি।

তবে বিশ্লেষক ও রাজনীতিকদের অনেকে মনে করেন, সরকারের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার প্রসঙ্গ আলোচনায় আসার পেছনে নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়ায় বিষয়টিও অন্যতম একটি কারণ।

দায় রয়েছে বিএনপিরও

অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার প্রসঙ্গ আলোচনায় আসা বা পরিস্থিতির জন্য বিএনপির দায় রয়েছে বলেও বিশ্লেষকরা বলছেন।

লেখক, বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ভোট হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এই ধারণা থেকে দলটির নেতাকর্মীরা সারাদেশে একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে।

তিনি মনে করছেন, নেতাকর্মীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপির ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মানুষ পতিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের পার্থক্য দেখতে পাচ্ছে না।

যদিও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে। সারা দেশে দলটির এবং এর অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনগুলোর বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কার করাসহ সাংগঠনিক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাঁদাবাজি, দখলের মতো অপরাধ থামানো যায়নি।

এখানেই বিএনপির দায় দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, এমন একটা ধারণা সাধারণ মানুষের অনেকের মধ্যেও তৈরি হয়েছে।

লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকলে উঠবে আইনগত প্রশ্ন

অন্তর্বর্তী সরকার লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকলে প্রথমত আইনগত প্রশ্ন উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে সরকারের প্রতি তখন কতটা সমর্থন থাকবে, সেটিও একটি বিষয় বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

যেহেতু বর্তমান সংবিধানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কোনো ব্যবস্থা নেই, সে কারণে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সমর্থনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত নেওয়া হয়েছিল।

তবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বিষয়টাকে ব্যখ্যা করেন ভিন্নভাবে। তিনি বলেন, আদালতের মতামত এবং রায়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। মতামত মানার বাধ্যবাধকতা থাকে না, যেটা রায়ে থাকে।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ জিয়াউর রহমানের ক্ষমতার আসা ও সামরিক শাসন রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার সময়টাকে বৈধ্যতা দেওয়া হয়েছিল সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে। আর সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনকে।

এই দুটি সংশোধনীই আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছিল। দুটি সংশোধনীই বাতিল করেছিল আদালত। রায়ে বলা হয়েছিল, জাতীয় নিরাপত্তা বা জাতীয় কোনো প্রয়োজনেই অসাংবিধানিক কোনো বিষয়কে বৈধতা দেওয়া যাবে না।

আইনজীবী শাহদীন মালিকের বক্তব্য হচ্ছে, এই অন্তর্বর্তী সরকারকেই নির্বাচিত সংসদে বৈধতা দিতে হবে। সেখানে অনির্বাচিত সরকার পাঁচ বছর বা দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকলে আইনগত প্রশ্ন উঠতে পারে। বৈধতার প্রশ্নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও সমস্যা তৈরি হতে পারে।

একটি অনির্বাচিত সরকার নির্বাচন না দিয়ে দীর্ঘ সময় থাকলে, এই সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

দেশের ভেতরেও এই সরকারের অংশীজন হিসেবে রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন পক্ষ রয়েছে। সেখানে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল দ্রুত নির্বাচন চাইছে। ফলে অংশীজনদের সঙ্গেও সরকারের দূরত্ব বাড়তে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, সরকারের সময় দীর্ঘ হলে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেটা আমাদের চিন্তার ও ধারণার আড়ালে থাকতে পারে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিলে এ সরকারের লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকা কঠিন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির অসন্তুষ্টি কেন?

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শীর্ষ পর্যায়ের সাতজন নেতাসহ গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। দলটির পক্ষ থেকেই এই বৈঠক চাওয়া হয়েছিল।

এই বৈঠকে তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছেন এবং এটিই তাদের সময়সীমা, অন্তর্বর্তী সরকারকে এই বার্তা দিয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বৈঠকের পর এ কথাই জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।

বৈঠকে অংশ নেওয়া দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা এখন দ্রুত নির্বাচন করার বিষয়কেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দলের এমন অবস্থান থেকে নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্য তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ওই বৈঠক করেছেন। তবে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।

বৈঠকের পর অপেক্ষমান সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল ইসমলাম আলমগীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো তাকে জানিয়েছি, যার মধ্যে প্রধান ছিল নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ। প্রধান উপদেষ্টা কোনো সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন দেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।

ডিসেম্বরের পরে আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব কেন নয়, সে বিষয়ে বৈঠকে বিএনপি নেতারা প্রধান উপদেষ্টাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বলে তারা জানান।

আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে রোজা শুরু হবে। এরপরে কোরবানির ঈদ আসবে। এছাড়া জুন মাসে বর্ষা মৌসুম চলে আসবে। এমন পরিস্থিতি নির্বাচনের জন্য সুবিধাজনক নয় বলে বিএনপি মনে করে।

এসব যুক্তিই দলটির নেতারা বৈঠকে তুলেছেন। কিন্তু তারা সঠিক জবাব পাননি এবং সেটি তাদের হতাশ করেছে বলেও দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

তারা এ-ও জানান, প্রধান উপদেষ্টা তাদের বলেছেন, তিনি জাতির কাছে ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। সেই অবস্থানেই তিনি আছেন। এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি বিএনপি।

দলটি এখন নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে সরকারের ওপর আরও চাপ বাড়াতে চায়। সেজন্য অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার কথা বলছেন বিএনপি নেতারা।

বিএনপির অসন্তুষ্টির প্রশ্নে সরকারের ব্যাখ্যা ভিন্নরকম

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অন্য যে উপদেষ্টারা ছিলেন, তাদের একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, বিএনপি অসন্তুষ্ট হয়েছে, আলোচনায় এটা তাদের মনে হয়নি।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বিএনপির মহাসচিবের এটা বলার অবশ্যই অধিকার আছে। আমার কাছে ওনাদেরকে দেখে হ্যাপি লেগেছে যখন আমাদের ডায়লগটা শেষ হয়েছে। মনে হয়েছে ওনাদের মনে যে প্রশ্ন ছিল সেগুলোর উত্তর তারা পেয়েছেন। আমার কাছে তা মনে হয়েছে, ফখরুল ভাইয়ের কাছে অন্যরকম মনে হতে পারে।

নির্বাচন কোনোভাবেই আগামী বছরের জুনের পরে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, আমরা বিএনপিকে ক্যাটাগরিক্যালি বলেছি, নির্বাচন কোনোভাবেই জুনের পরে যাবে না। যে যা কথা বলুক না কেন, এটা পুরো জাতির প্রতি প্রধান উপদেষ্টার অঙ্গীকার।

আসিফ নজরুল উল্লেখ করেন, ডিসেম্বরে সম্ভব হলে ডিসেম্বরে, জানুয়ারিতে সম্ভব হলে জানুয়ারিতেই নির্বাচন হবে বলে বিএনপিকে বৈঠকে বোঝানো হয়েছে।

তবে বিভিন্ন সময় সরকারের উপদেষ্টারা নির্বাচন নিয়ে নানারকম মন্তব্য করেন, সে সব বক্তব্য বিভ্রান্তি তৈরি করছে বলে বিএনপি মনে করে।

উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, উপদেষ্টাদের কারও কারও কথার মধ্যে যদি অস্পষ্টতা থাকে, যে যেটাই বলুক না কেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যেটা বারবার বলেছেন, সেটাই সরকারের অবস্থান। অন্য কারও বেফাঁস কথায় যেন বিভান্ত না হয়, সে কথাও বিএনপি নেতাদের বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

এনসিপি, জামায়াতসহ অন্য দলগুলোর অবস্থান কী

নির্বাচনের সময় নিয়ে দলগুলো অবস্থানের কিছুটা পার্থক্য আছে। তবে এখন সক্রিয় বেশিরভাগ দলই দ্রুত নির্বাচন চাইছে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসিকে বলেন, তারা মনে করেন, ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচন করা উচিত।

এই সময়ের পরে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বিএনপি যে সব সমস্যার কথা বলেছে, জামায়াতও একই ধরনের সমস্যার কথা বলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন আসার পর দেশটির দুজন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখন ঢাকা সফর করছেন। তারা গতকাল জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি ও বিএনপির সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছেন।

এসব বৈঠকে মার্কিন কূটনীতিকেরা মূলত বাংলাদেশে নির্বাচন, রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর অবস্থান জানতে চান। বিএনপিসহ দলগুলোও তাদের নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেছে।

সেই বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানও বলেছেন, তারা রোজা শুরুর আগে নির্বাচন চান।

তবে সংস্কার শেষ না করে নির্বাচন করার বিপক্ষে অবস্থান তুলে ধরে আসছে এনসিপি। দলটির সেই অবস্থানের তেমন পরিবর্তন হয়নি।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, মৌলিক সংস্কার শেষ করা এবং জুলাইয়ের আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচার স্পষ্ট করার পর নির্বাচন হতে পারে।

এছাড়া সিপিবিসহ বামপন্থি এবং ইসলামপন্থি অন্য দলগুলোও বলছে, দেশকে নির্বাচনের সড়কে নেওয়া দরকার। যদিও তাদের মধ্যেও নির্বাচনের সময় নিয়ে মতপার্তক্য এখনো আছে।

অন্যদিকে, সংস্কার প্রশ্নে জুলাই চার্টার তৈরির জন্য সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক করার কথা রয়েছে।

বিএনপি অবশ্য জুলাই চার্টারে সই করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু দলটি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়াবে, এমন ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে।

 

সর্বশেষ - সংবাদ

আপনার জন্য নির্বাচিত

ঈদযাত্রার শেষ মুহূর্তে চন্দ্রা মোড়ে যানজট

৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম রূপগঞ্জে দুই সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

কোটা আন্দোলন: পাঁচ দিনে সারা দেশে প্রায় তিন হাজার গ্রেপ্তার

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

রূপসার সামন্ত সেনাই সালাউদ্দিন পিন্টুর পিতা এবং মহিউদ্দিন মিন্টুর চাচা মোহাম্মদ লিয়াকাত শেখের মৃত্যু ও জানাজা সম্পুর্ণ

ফকিরের বাজারে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ

শেখ হাসিনা কখনো দেশ ও দেশের মানুষের কথা ভাবেননি : নিপুন রায়

গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ

বিনিয়োগ সামিটকে সফল করতে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা হবে: বিডা

হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টাদের শোক