‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। চাকরি স্থায়ীকরণে তাদের দাবির বিষয়ে সরকারের কর্ণপাত না করায় সোমবার তীব্র সমালোচনা করেন রাজনৈতিক নেতারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২০ দিন ধরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, এনসিপি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা দিদারুল আলম ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন দলের নেতারা আন্দোলনরত কর্মীদের সমাবেশে যোগ দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ অবস্থান করে সংহতি প্রকাশ করেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার যেভাবে দাবি আদায়ের পথ রুদ্ধ করেছে, তাতে মনে হয় এটি নতুন এক দমনমূলক সময়। আন্দোলন ছাড়া সাধারণ মানুষের দাবির প্রতি নজর নেই সরকারের।
তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য আপা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, যেহেতু প্রকল্পটি তৃতীয় ফেজে যাচ্ছে, এ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জনবল হিসেবে পরবর্তী ধাপে যুক্ত করলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কেবল দলীয় সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বলে এদের বাদ দেওয়ার চিন্তা হলে, রাষ্ট্রের সর্বত্রই সংকট দেখা দেবে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরা প্রায় ২০ দিন ধরে দেখছি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আমাদের বোনেরা তাদের ন্যায্য দাবির জন্য রোদের মধ্যে অবস্থান করছেন। কিন্তু সরকার নির্বিকার। জনগণের কথা শোনা, তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, আজ যদি হাজারো নারী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন বা কার্যালয় ঘেরাও করতেন, তাহলে হয়তো সরকারের টনক নড়ত। তাই আমরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—অবিলম্বে তথ্য আপা প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনায় নিয়ে ন্যায্য সমাধানের উদ্যোগ নিন।
সামান্তা শারমিন বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দায়িত্বশীলতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কর্মরত এত সংখ্যক মেয়েকে দলীয় পরিচয় বা রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা কখনোই সমীচীন নয়। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অমানবিক সিদ্ধান্ত। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে আমরা জোরালোভাবে অনুরোধ করছি—আপনারা অংশীজনদের সঙ্গে বসুন, তাদের বক্তব্য শুনুন। কারা প্রকৃত অপরাধী, কারা ফ্যাসিবাদ ও অনিয়মের দোসর—তাদের খুঁজে বের করুন। সবাইকে একসূত্রে গেঁথে অপমান ও বঞ্চনার শিকার করা অন্যায়।
বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা দিদারুল ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সেক্রেটারি শহীদুল্লাহ কায়সার এবং ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুও এসময় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
তারা সবাই দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে তথ্য আপা কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।