অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানানোর বিষয়টি এক ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘তারা (তিনটি দলের নেতারা) বলেছেন…চিফ অ্যাডভাইজারের (প্রধান উপদেষ্টা) নেতৃত্বে আস্থা আছে। এবং তাকে অনুরোধ করেছেন যাতে… ওনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন (অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন) হয়। ওনার নেতৃত্বে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন।
শনিবার (২৪ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, বৈঠকে প্রতিটি দল নিজ নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাকে (প্রধান উপদেষ্টা) পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ করেছে এবং বলেছে, তার নেতৃত্বেই যেন বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়।
এর আগে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে টানা পৃথক বৈঠক হয়।
বৈঠকে বিদ্যমান পরিস্থিতি, নির্বাচন ও সংস্কার ছাড়াও নিজ নিজ দলের অবস্থান ও দাবির বিষয়ে তুলে ধরার কথা বলেছেন দলগুলোর নেতারা।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতি দলগুলো আস্থা রেখেছে। কেউ তার পদত্যাগ দাবি করেনি। বরং তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সময় দিতে প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত দলগুলোর শীর্ষ নেতারা নির্বাচন আয়োজন, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক সংস্কারে ইতিবাচক ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চান, তিনটি দল সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে। সে জায়গা থেকে সরকারের কাছ থেকে এ সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপটা আসলে কবে পাবে?
এর জবাবে প্রেস সচিব বলেন, প্রফেসর ইউনূস বারবার বলেছেন, ইলেকশন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে।… এই জুন, ৩০ তারিখটা একটা সুনির্দিষ্ট ডেট। উনি বলছেন যে, এর বাইরে যাবে না।
উনি এক কথার মানুষ।
এর আগে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে। শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন বিএনপির চার নেতা। এতে নেতৃত্ব দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
প্রতিনিধি দলে থাকা অন্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জামায়াতের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। তারা হলেন- জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের সঙ্গেও বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। অন্য সদস্যরা হলেন, দলটির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা।