২৬ মার্চ ২০২৪—স্বাধীনতার প্রতীকী দিনে ‘লাল স্বাধীনতা’র নতুন ভোরের ডাক দিয়েছিলেন একদল তরুণ নেতা। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, যুগ বদলাবে। শোষিতের মুখে হাসি ফিরবে।
কিন্তু সময় এখন বলছে, সেই ভোরটা ছিল হয়তো খুবই ক্ষণস্থায়ী—আজ যখন আমরা দাঁড়িয়ে আছি মে ২০২৫-এ, তখন চারপাশে শুধুই হতাশা, ভয় আর প্রশ্নের গুঞ্জন।
১. শুরুর স্বপ্ন: মুখে ছিল বিপ্লব, বুকে ছিল প্রতিজ্ঞা
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কাঁপিয়ে উঠেছিল মোহাম্মদ কামরুল হায়দার চৌধুরীর কণ্ঠস্বর।
তিনি বলেছিলেন:
<span;>> “এখন থেকে জনগণই হবে মালিক, রাষ্ট্র চলবে শ্রমিকের হাতে।”
তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ডা. রেহান শাকিল হোসেন, নাজমুল রাশেদ জকি, আর তামান্না সুলতানা তানিয়া—যারা দাবি করেছিলেন,
<span;>> “আমরা কারো ক্ষমতা চাই না, আমরা চাই সমতা, অধিকার, ভ্রাতৃত্ব।”
২. বাস্তবের মুখোমুখি: শুরুতেই শ্বাসরোধ
প্রথম তিন মাসে কিছুটা আশাবাদী চিত্র দেখা গেলেও চতুর্থ মাস থেকেই সমাজজীবনের গায়ে ফুটতে শুরু করে অসঙ্গতির ফোঁড়া।
জনগণের নামে চালু হওয়া ‘গণবণ্টন স্কিম’ বন্ধ হয়ে গেল তহবিল না থাকায়।
বিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যপুস্তক নেই, শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না ৩ মাস ধরে।
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া, অথচ ‘মূল্যনিয়ন্ত্রণ কমিটি’ নামে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই।
গ্রামে-গঞ্জে চালের বদলে দেওয়া হচ্ছে “ভাতের প্রতিশ্রুতি”।
৩. নেতার মুখোশ খুলছে?
তামান্না সুলতানা তানিয়া—যিনি নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলতেন, তার বিরুদ্ধে ওঠে ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগ।
ডা. রেহান শাকিলকে পাওয়া যাচ্ছে না—গুজব রয়েছে তিনি এখন দুবাইয়ে।
মোহাম্মদ কামরুল আজ আর জনসমক্ষে আসেন না—তার চারপাশে ঘুরছে ‘নতুন রক্ষীবাহিনী’-র ছায়া।
৪. মানুষের মুখে কথাঃ “এই স্বাধীনতা আমাদের নয়”
রংপুরের দিনমজুর রহিম উদ্দিন বলেন:
<span;>> “আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন শুধু লাইন ধরছি চালের জন্য।”
মাদারীপুরের একজন কলেজছাত্রী বলেন:
<span;>> “আমরা কথা বলতে পারি না। বললে বলে, তুমি ‘বিরোধী’। স্বাধীনতা কি চুপ থাকার নাম?”
৫. রাষ্ট্রীয় জবাব কোথায়?
অভিযোগ, প্রশ্ন, দুর্দশা—সবই আছে। কিন্তু নেই কোনও জবাব।
জাতীয় গণশুনানি স্থগিত। সাংবাদিকদের উপর চাপ। সামাজিক মাধ্যমে ‘লাল স্বাধীনতা’-বিরোধী মত পোস্ট মানেই হুমকি।
একজন নাগরিক, একজন সাংবাদিকের প্রতিজ্ঞা
আমি শুধু রিপোর্টার নই।
আমি এই দেশের সন্তান, এই দেশের একজন মুক্তিকামী নাগরিক।
আমি চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি—লিখে যাই। যাতে কেউ বলে না, “সত্যটা কেউ বলেনি।”
এই “লাল স্বাধীনতা”-র নামে কেউ যেন নতুন শৃঙ্খল তৈরি না করে।
আমার লেখনী তাদের উদ্দেশ্যে—যারা এখনও বুকের মধ্যে বাঁচিয়ে রেখেছেন একটা কথাঃ
<span;>> “আমরা মানুষ, আমরা চুপ থাকব না।”