আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সরকার ও প্রশাসন নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে আমাদের আজকের এই ঘটনা দেখতে হত না বলে মনে করে সংগঠনটি।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। এসময় চলমান ভয়াবহ অস্থিতিশীলতার দায় নিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকারকে তড়িৎগতিতে ব্যবস্থা নেওয়ারও আহবান জানান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারির মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন এপিপি হত্যার শিকার হয়েছেন। এছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে মসজিদ ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। দু’টি ঘটনা-ই অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। জাতীয় নাগরিক কমিটি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। ইতিপূর্বে সনাতনী জাগরণী জোটের চিন্ময় কৃষ্ণকে চট্টগ্রামের স্থানীয় এক বিএনপি নেতার করা রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল।
আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে- বিগত বেশ কিছুদিন ধরে দেশজুড়ে অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কতিপয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাসহ বিভিন্ন আশংকাজনক পরিস্থিতিতে সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে নিস্ক্রিয় অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়াও, সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও কাজে অদূরদর্শী ভূমিকাও দেখা যাচ্ছে। এতে করে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি নানাবিধ ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে সকল ধর্ম-শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখেছি আমরা। দিল্লির তাবেদার গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে দিল্লিতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে এদেশের আপামর জনগণ। চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরের গণহত্যাকারী পতিত ফ্যাসিবাদি শক্তি এবং দেশের বাইরের ষড়যন্ত্রকারীরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পাঁয়তারা করছে। আমরা সারা বাংলাদেশের নাগরিকদের আহ্বান জানাই– আইন নিজের তুলে নিয়ে কোনোভাবেই প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন না এবং আধিপত্যবাদী শক্তিকে নিজেদের ক্রীড়ানক বানাতে দিবেন না। দিল্লির এবং পতিত ফ্যাসিবাদি গণহত্যাকারী দলের পাতা ফাঁদে আমরা পড়তে যাচ্ছি। দেশের নাগরিকরাই পারে এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের সকলকেই দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে। চট্টগ্রামসহ সকল স্থানে নাগরিকদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।