যেখানে সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। সন্ত্রাস দমনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে:
১. আইন ও নীতির শক্তিশালী বাস্তবায়ন
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন: সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর আইন এবং বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা: সন্ত্রাসবাদের সাথে সম্পর্কিত যে কোন অপরাধমূলক কার্যকলাপের দ্রুত বিচারের জন্য শক্তিশালী আইন ও নীতি প্রণয়ন করা জরুরি।
২. জঙ্গিবাদে অর্থায়ন বন্ধ করা
অর্থের উৎস রোধ: সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোকে অর্থ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। এটি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পেছনে থাকা অর্থের উৎস চিহ্নিত করে এবং সেগুলো বন্ধ করার মাধ্যমে করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: অর্থ পাচারের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে সন্ত্রাসী গ্রুপের অর্থায়ন রোধ করা।
৩. গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি
তথ্য সংগ্রহ: সন্ত্রাসবাদের আগাম সতর্কতা নিতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে হবে। তথ্য সংগ্রহ ও শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা আগেই চিহ্নিত করা যেতে পারে। অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা তৎপরতা: সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে নিরীক্ষণ বাড়ানো এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের উপর নজরদারি বৃদ্ধি করা।
৪. মাধ্যমিক শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি
যুবকরা সচেতন করা: সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শ থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো। ধর্মীয় উগ্রবাদ রোধ: তরুণদের ধর্মীয় উগ্রবাদ থেকে রক্ষা করার জন্য ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করা।
৫. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
বহুপাক্ষিক সহযোগিতা: সন্ত্রাসবাদ একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা, তাই বিশ্বব্যাপী একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসবাদ দমন করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার সংস্থা, এবং বিভিন্ন দেশকে একত্রিত করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সন্ত্রাসবাদে সমর্থন বন্ধ করা: আন্তর্জাতিক মহলে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর প্রতি কোনো ধরনের সমর্থন বা আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
৬. স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ
সমাজের সচেতনতা: সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতন করা এবং তাদের মনে স্থায়ী পরিবর্তন আনা। স্থানীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা: স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সাথে জনগণের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা যাতে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সহজে প্রতিরোধ গড়া যায়।
৭. সন্ত্রাসবাদের মৌলিক কারণগুলির সমাধান
বেকারত্ব ও দারিদ্র্য: সন্ত্রাসবাদের মূল কারণগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব অন্যতম। এসব সমস্যা সমাধান করার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করা থেকে যুবসমাজকে বিরত রাখা সম্ভব। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈষম্য: রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, এবং বৈষম্যও সন্ত্রাসবাদের কারণ হতে পারে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. সামাজিক পুনর্বাসন এবং মীমাংসা
বিপথগামী যুবকদের পুনর্বাসন: সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত যুবকদের পুনর্বাসন করার জন্য মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করা। সমঝোতা ও শান্তির উদ্যোগ: সন্ত্রাসী কার্যক্রমের শিকার জনগণের মধ্যে পুনর্মিলন এবং সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ। সন্ত্রাসবাদ দমন একটি সময়সাপেক্ষ এবং বহুমুখী প্রক্রিয়া, যা সব পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে।
মোঃ সোহেল সামাদ বাচ্চু
যুগ্ম মহাসচিব – বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)