বর্ষীয়ান নেতা, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুর খবরটি গুজব।
ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহীন তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘তোফায়েল ভাইকে নিয়ে ছড়ানো খবর ভিত্তিহীন। তিনি ভাল আছেন। প্লিজ গুজব ছড়াবেন না।
পরিবারসূত্রে জানা গেছে, তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে। এর আগে, সোমবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুর খবর (গুজব) ছড়িয়ে পড়ে।
তোফায়েল আহমেদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, প্রায় তিন বছর আগে প্রথম দফায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বর্ষীয়ান এই নেতা। এরপর তিনি আরেক দফায় করোনা আক্রান্ত হন। সেই সঙ্গে কমপক্ষে দু’দফায় তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটে। একসময় তিনি স্মৃতিশক্তি হারান।
বর্তমানে তোফায়েল আহমেদের শরীরের বাঁ হাত ও পা একেবারেই অবশ হয়ে আছে। ফলে তিনি চলাফেরায় একেবারেই অক্ষম। মাঝেমধ্যে গৃহকর্মীরা হুইলচেয়ারে বসিয়ে ঘুরিয়ে আনলেও সেটি বোঝার শক্তি নেই তাঁর। তিনি কথাও বলতে পারেন না। খাবার কম খান। ফলে তিনি বেশ শুকিয়ে গেছেন। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের কেউ দেখতে এলে শুধুই নির্বাক তাকিয়ে থাকেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন, পরে অন্তর্বর্তী সরকারের দেশ পরিচালনা– এর কিছুই অনুধাবন করতে পারছেন না আওয়ামী লীগের শীর্ষ নীতিনির্ধারক নেতা তোফায়েল আহমেদ। স্ট্রোক-পরবর্তী শরীরের একাংশ প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া ও স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ায় তিনি জাগতিক কোনো কিছু বুঝে ওঠার মতো পরিস্থিতিতে নেই।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক কিংবদন্তিখ্যাত তোফায়েল আহমেদ ছিলেন উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬,২০০৮ ও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন তিনি শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে ২০১৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।