জয়নাল আবেদিন (শেরপুর জেলা সংবাদদাতা): শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার প্রাক্তন খাদ্য নিয়ন্ত্রক সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সিদ্দিকুর রহমান নকলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক থাকাকালীন বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ছিলেন। সন্ধ্যার পর তাকে প্রায়শই বিভিন্ন দোকানপাটে এবং রাজনৈতিক নেতাদের সাথে দেখা যেত।
ডিলার নিয়োগে অনিয়ম
নকলা উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ের খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে সিদ্দিকুর রহমান ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যারা ডিলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাদের কাছ থেকে তিনি বিভিন্নভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, ডিলারির জন্য আবেদন করার সময় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। যাদের কাগজপত্র সঠিক ছিল, তাদের বিভিন্ন অজুহাতে অবৈধভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে, যাদের কাগজপত্র ঠিক ছিল না, তাদেরকেই ডিলারশিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নীতিমালা ২০২৪-কে তোয়াক্কা না করে সিদ্দিকুর রহমান নিজের মনগড়া নীতিমালা তৈরি করেছেন। ১২২ জন আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র ২৪ জনকে ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, অথচ ৯৮ জন আবেদনকারীর কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সিদ্দিকুর রহমান নিজের তৈরি করা নীতিমালাকে সঠিক প্রমাণ করতে হাইকোর্টে রিট করিয়েছেন, যাতে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৪ জন ডিলারকে বৈধ করা যায়।
অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগ
সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তার দুর্নীতিতে বিভিন্ন দোকানদার এবং রাজনৈতিক নেতারা সহযোগিতা করতেন। নকলা উপজেলায় গোডাউনের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদেরও তিনি দুর্নীতির জন্য সহযোগিতা করতেন। শুধু তাই নয়, ইউনিয়ন পরিষদের কোনো কাজের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বা গমের ডিও (Delivery Order) প্রকল্পের সভাপতির কাছে থাকার কথা থাকলেও, সিদ্দিকুর রহমান তা অবৈধ সিন্ডিকেট কারি ব্যবসায়ীদের কাছে দিয়ে দিতেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
তদন্তের দাবি
যারা খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ থেকে বাদ পড়েছেন, তারা এই পুরো ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত এবং সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
নকলা উপজেলার নতুন খাদ্য নিয়ন্ত্রক খলিলুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের পর, ৯৮ জন খাদ্যবান্ধব ডিলারের জন্য আবেদনকারীর কাগজপত্র সঠিক আছে বলে দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো আরও জোরালো হচ্ছে।