প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে ঢুকে পড়ে। তারা সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত নানা সামগ্রী নিয়ে যান ও পুরো ভবনে অগ্নিসংযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা হয়। ভবনটির বিভিন্ন তলায় ও রুমে ভাঙচুর করা হয়। পরে পুরো ভবনে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভবনের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভাঙচুর করা হয়েছে। আশপাশের ভবনেও আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি।
সুধা সদনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ : ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বাসভবন সুধা সদনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সুধা সদন ভাঙচুর করে তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বের করে যে যার মতো নিয়ে যান। বাড়ির ভেতরেও আগুন দেওয়া হয়েছে।
বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভাঙচুর : অন্যদিকে রাজধানীর বিজয় সরণিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। এদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একদল মানুষকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার বিজয় সরণিতে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য’ উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়সহ ৩ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড : এদিকে, সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। পরে পরিস্থিতি বুঝে তারা বেরিয়ে যান। বেলা ৩টার দিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করেন। তারা নিচতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত উঠে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। অন্যদিকে এদিন বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩/এ সড়কে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা হয়। এ সময় সেখানে দলটির কোনো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন না। তবে কার্যালয়টির তিনজন কর্মচারী থাকলেও হামলার কয়েক মিনিট আগে তারা বেরিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টাফ জানান, অনেক মানুষ এসে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা করেছেন। তারা ভাঙচুর করে দুটো ভবনেই আগুন ধরিয়ে দেন। আমরা তিনজন স্টাফ দ্রুত বের হয়ে এসেছি।
একইভাবে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।