নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর অথরাইজড অফিসার ইমরুল হাসান দুর্নীতির কারণে দেশ থেকে লাপাত্তার অভিযোগ উঠেছে।অতিমাত্রায় দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের নামের তালিকা করলে ঘুরে ফিরে সাবেক অথরাইজড অফিসার-৪/১ ইমরুল হাসান এর নাম উঠে আসবে। তিনি চাকরিতে বহাল থাকাবস্থায় ময়মনসিংহ-১০ আসনের ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক পূর্ত প্রতিমন্ত্রীর স্নেহভাজন এবং রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মিয়ার কাছের লোক হওয়ায় খুব অল্প সময়ে ঘুষ, দুর্নীতির বরপুত্রে পরিনত হয়েছিলেন।
ওয়াটার বডিতে ইমারতের প্লান অনুমোদন, এয়ারপোর্টের রানওয়ের পাশে প্রিয়াংকা সিটিতে সিভিল এভিয়েশনের মতামত না নিয়ে অবৈধ লেনদেন এর মাধ্যমে বেশি তলার অনুমোদন, বনানী-গুলশান এলাকার উচ্চতার ব্যত্যয় করে নির্মিত অনেক ভবন মালিক কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অন্যের জমি অধিগ্রহণ করে ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর পরেও আজও সে রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
রাজউকের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জোন-৪/১ কর্মরত থেকে অঢেল সম্পদ গড়েছেন ইমরুল হাসান। তার ক্যাশিয়ারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন এবং তার অবর্তমানে এদেশে রক্ষিত সকল সম্পওি দেখভাল করেন তার একই এলাকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই এবং বিজনেস পার্টনার অথরাইজড অফিসার শেখ মাহাব্বির রনি। কিছু অপকর্মের সহযোগিতায় মাহাব্বির রনি সহযোগিতা করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
ইমরুল হাসান জোন -৩/১ দায়িত্বে থাকাকালিন এয়ারপোর্টের রানওয়ের পাশে প্রিয়াংকা সিটিতে সিভিল এভিয়েশনের মতামত না নিয়ে অবৈধ টাকার লেনদেন এর মাধ্যমে বেশি তলার অনুমোদন দিয়েছেন। এখানে উল্লেখ থাকে এ বিষয়ে (প্রিয়াংকা সিটি) রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিলো যার সদস্য সচিব (উপপরিচালক, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) ছিলেন তিনি নিজেই যে কারনে আলোর মুখ দেখেনি যে কমিটির প্রতিবেদন। হাসিনা পতনের পরে ০৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তার উল্লেখিত সকল অপরাধ ধীরে ধীরে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকলে এবং তদন্ত কমিটি গঠিত হলে তিনি দ্রুত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরিকে তিনি দ্রুত দেশ ত্যাগ করেন।
তবে অভিযোগ রযেছে তার অঢেল সম্পদের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছেন বলে জানাযায়।
কথিত আছে অবৈধ পন্থায় ১০০-২০০ কোটির মালিক হয়েছেন এবং সুকৌশলে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছেন, যা দিয়ে কিনেছেন বাড়ি ও নাগরিকত্ব। তার স্ত্রী, শ্যালক এবং ভায়রা ভাইকে বছর খানেক আগেই বিদেশে পাঠিয়ে সেটেল করেছেন এবং তার স্ত্রী , শ্যালক ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিত্ব গ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়। একটি বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে ঘটনার সত্যতা মিলে ।
তাঁর পরবর্তী কর্মকান্ডে রাজউক সূত্রে জানা যায় তিনি চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চাকুরি হতে ইস্তফা পত্র জমা দিয়েছেন, কিন্তু কিভাবে সম্ভব যেখানে তিনি ২৮/১২/২০২৪ খ্রিঃ ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গন্তব্যে ফ্যামিলি রিইউনিয়ন ভিসায় বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। তিনি তার পাসেপোর্টে পেশা দেখিছেন বেসরকারি চাকুরি অথচ তিনি রাজউকের গেজেটেড অফিসার (অথরাইজড অফিসার) ছিলেন। অর্থাৎ সরকারি চাকুরি আইন ও বিধিমালা অনুসারে এটা পলায়ন, অসাদাচারণ , ভুল তথ্য প্রদান করে প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছেন এবং মানি লন্ডারিং এর মতো অপরাধ করেছেন।
উল্লেখিত কারনে তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকুরি বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা এবং প্রতারণা, মানি লন্ডারিং এর দায়ে সিভিল মামলা করা সমীচীন বলে মনে করেন অনেকে, কিন্তু কোন অদৃশ্য কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আজও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এ বিষয় চেয়ারম্যান কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ইমরুল হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে । তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে ও যোগাযোগ করতে না পারায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
